বিশেষ কয়েকটি সুন্নতী খাদ্য
১) রুটি-গোশত খাওয়া সুন্নত : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুটি-গোশত পছন্দ করতেন। গোশতের মধ্যে পিঠের গোশত এবং বিশেষ করে খাশী বা বকরীর কাঁধ ও সামনের ডান পায়ের (হাড়যুক্ত) গোশত অধিক পছন্দ করতেন।হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভূনা গোশতও খেয়েছেন।
গোশতের ব্যাপারে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, “দুনিয়াবাসী ও জান্নাতবাসীদের খাদ্যের মধ্যে গোশতই হলো সর্দার।” (শামায়েলে তিরমিযী, ইবনে মাযাহ শরীফ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
২) কদু খাওয়া সুন্নত : হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে-
عن حضرت انس بن مالك رضى الله تعالى عنه انه خياطا دعا النبى صلى الله عليه وسلم لطعام صنعه فذهبت مع النبى صلى الله عليه وسلم فقرب خبز شعير ومرعا فيه دباء وقديد رايت النبى صلى الله عليه وسلم يتتمع الدباء من حوالى القصعة فلم ازل احب الدباء بعد يومئذ
অর্থ : “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত যে, জনৈক দর্জি ছাহাবী কিছু খাবার প্রস্তুত করে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দাওয়াত করলেন। আমিও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে গেলাম। তিনি যবের রুটি আর কিছু শুরুয়া যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল পরিবেশন করলেন। আমি দেখলাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পেয়ালার চতুর্দিক থেকে বেছে বেছে কদু খাচ্ছেন। সে দিনের পর থেকে আমিও কদু খাওয়া পছন্দ করতে লাগলাম।” (বুখারী শরীফ)
অতএব, সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, কদু খাওয়া খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাই নয় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই কদুকে খুব পছন্দ করতেন।
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালামকে বলেন যে, “তরকারীর সাথে অধিক পরিমানে কদু রান্না করুন। কারণ এতে বিষন্ন মনে শক্তি আসে। কদু বুদ্ধি তীক্ষ্ণ করে ও মস্তিস্ককে শক্তিশালী করে।
কদুর প্রতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার এমনিতর পছন্দের কারণে আক্বাইদের কিতাবে এসেছে কেউ যদি বলে, “আমি কদু পছন্দ করিনা তাহলে সে কুফরী করলো। কারণ তার এ মতটা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মত মুবারক-এর বিপরীত।” (কাজীখান, শেফা, যাদুল মা’আদ, আখলাকুন্নবী, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
সুতরাং কদু খাওয়া যেহেতু সুন্নত আর হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু কদু পছন্দ করতেন তাই কেউ যদি বলে আমি কদু পছন্দ করিনা তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে।
৩) তাজা খেজুরের সাথে খরবুযা (তরমুজ) খাওয়া সুন্নত : উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম হতে বর্ণিত তিনি বলেন, “হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাজা খেজুরের সাথে খরবুযা (তরমুজ) খেতেন এবং বলতেন, উভয়টিই উত্তম ফল।” (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, যাদুল মা’আদ)
৪) শশাকে কাঁচা খুরমাসহ আহার করা সুন্নত : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শশাকে কাঁচা খুরমাসহ খেতেন এবং ইরশাদ মুবারক করতেন যে, এটার তাপ ওটার ঠাণ্ডাকে দমন করে। (আবূ দাঊদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ)
এছাড়া হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লবণ সহযোগে শসা (কাকড়ী) খেতেন। (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, যাদুল মা’আদ)
৫) কাঁচা (সবুজ) খুরমা শুষ্ক খুরমার সাথে আহার করা সুন্নত : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, “কাঁচা খুরমা শুষ্ক খুরমার সাথে আহার কর, কারণ, শয়তান মানুষকে এই বস্তু দুটি খেতে দেখলে অনুতাপের সাথে বলতে থাকে যে, এই মানুষ এখনো জীবিত আছে, যে পুরনো বস্তুর সঙ্গে নতুন বস্তু মিশিয়ে একত্রে আহর করে।” (নাসাঈ শরীফ, ইবনে মাযাহ শরীফ)
৬) ঘি-এর পাত্রে মধু রাখা সুন্নত : ঘি-এর পাত্রে মধু রাখাকে সুনুত বলে। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, ‘ছানা ও সুনুতকে একত্রে চাটনি বানাও, এ দুটোর মধ্যে মৃত্যু ব্যতীত অন্য সকল রোগের আরোগ্য রয়েছে।” (ইবনে মাজাহ শরীফ, যাদুল মাআদ)