পবিত্র রাজারবাগ দরবার শরীফ উনার মধ্যে যে সব কর্মকাণ্ড সংগঠিত হয়

https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEgEaDGfTB3GRhFiDWcY8DtZYAa6JwWsrXfyyR9g_OnHTixW_JqVUzzl6efZ2vvv7YTxPDCteFnkIwFiSdvb7pqGFyVRy_r4N4AcyJxXlodUUnUUwlSV4AxoT4X_Xg1Tlddqzwqn2HiG_A6a/s1600/IMG_20150311_002710.jpg

১। রাজারবাগ দরবার শরীফে মহান আল্লাহ পাক ও উনার পেয়ারা হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের হাক্বিক্বী মুহব্বত মুবারক শিক্ষা দেওয়া হয়,দুনিয়া তথা গইরুল্লাহর মুহব্বত থেকে বিরত থাকার শিক্ষা দেওয়া হয় ও সবাইকে আল্লাহওয়ালা-আল্লাহওয়ালী হওয়ার হাক্বিক্বী তা’লিম প্রদান করা হয়।এবং হক্বের উপর ইস্তেকামত থাকার শিক্ষা দেওয়া হয়।

২। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার হাক্কিক্বী শা’ন,মান,মর্যাদা-মর্তবা বুলন্দ করা হয় এবং সারা বিশ্বে দ্বীন ইসলাম উনাকে জিন্দা তথা প্রচার-প্রসারের কাজে দায়িমীভাবে মশগুল থাকা হয়।


৩। ২৪ ঘন্টা দায়িমীভাবে মহান আল্লাহ পাক উনার, উনার পেয়ারা হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম,হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম,হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম,হযরত ছাহাবায়ে কিরাম
রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম,হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের সর্বোত্তম প্রসংশা মুবারক করা হয়।
 

৪। সমস্ত কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ট আমল,সর্বশ্রেষ্ট ইবাদত পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ ও পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ বিশেষ দিবস সমূহ হাক্বিক্বীভাবে পালন করা হয়।
 

 ৫। সমস্ত কায়িনাতবাসীর হেদায়েতের জন্য ও দোজাহানে হাক্বিক্বী কামিয়াবীর জন্য তা’লিম-তালক্বীন প্রদান করা হয় ও
কাফের-মুশরিক তথা শত্রুদের সর্বপ্রকার কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকার শিক্ষা দেওয়া হয়।
 

 ৬। সারা কায়িনাতের মধ্যে একমাত্র রাজারবাগ দরবার শরীফেই রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদর্শ মুতাবিক সর্বক্ষেত্রে খাছ সুন্নত মুবারক অনুসারে আমল করা হয়।যা সারা বিশ্বে আর কোথায়ও পাওয়া যাবে না।
 

 ৭। একমাত্র রাজারবাগ দরবার শরীফে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার খেলাফ বিন্দু মাত্র কোন হারাম- নাজায়িজ-বিদয়াত কাজ করা হয় না,কোন হারাম-নাজায়িজ কাজকে সমর্থনও করা হয় না,বরং হারামের বিরুদ্ধে বলা হয়। যেমন:- ছবি
তোলা,বেপর্দা হওয়া,টিভি চ্যানেল,গণতন্ত্র,রাজনীতি,হরতাল- লংমার্চ,খেলাধুলা,সুদ-ঘুস ইত্যাদি।


৮। এখানে মহিলাদের সেকশন আলাদা সেখানে ৫ বছরের উর্ধ্বে কোন ছেলে প্রবেশ করতে পারে না,পুরুষের সেকশন আলাদা সেখানে ৫ বছরের উর্ধ্বে কোন মেয়ে প্রবেশ করতে পারে না।
বিস্তারিত

প্রসিদ্ধ আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের দৃষ্টিতে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার গুরুত্ব ও ফযীলত

প্রসিদ্ধ আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের দৃষ্টিতে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার গুরুত্ব ও ফযীলত
১. হযরত ইমাম হাসান বসরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন –
“আমার একান্ত ইচ্ছা হয় যে, আমার যদি ওহুদ পাহাড় পরিমান স্বর্ণ থাকত তাহলে তা ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে ব্যয় করতাম। (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
২. হযরত ইমাম শাফেয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন –
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন উপলক্ষ্যে লোকজন একত্রিত করলো এবং খাদ্য তৈরি করলো ও জায়গা নির্দিষ্ট করলো এবং মীলাদ পাঠের জন্য উত্তম ভাবে (তথা সুন্নাহ ভিত্তিক) আমল করলো তাহলে উক্ত ব্যক্তিকে আল্লাহ পাক হাশরের দিন সিদ্দীক শহীদ, সালেহীনগণের সাথে উঠাবেন এবং তাঁর ঠিকানা হবে জান্নাতে নাঈমে ।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
৩.হযরত মারুফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন –
“যে ব্যক্তি ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে খাদ্যের আয়োজন করে, অতঃপর লোকজনকে জমা করে, মজলিশে আলোর ব্যবস্থা করে, পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন নতুন লেবাস পরিধান করে,মীলাদুন্নবীর তাজিমার্থে সু-ঘ্রাণ ও সুগন্ধি ব্যবহার করে। আল্লাহ পাক তাকে নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের প্রথম কাতারে হাশর করাবেন এবং সে জান্নাতের সুউচ্চ মাকামে অধিষ্ঠিত হবে।“ (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নেয়ামাতুল কুবরা)
৪.হযরত ইমাম সাররী সাক্বত্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন –
“যে ব্যক্তি মীলাদ শরীফ পাঠ বা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উদযাপন করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করল সে যেন তার জন্য জান্নাতে রওজা বা বাগান নিদিষ্ট করলো। কেননা সে তা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মুহব্বতের জন্যই করেছে। আর আল্লাহ্ পাক-এর রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসবে সে আমার সাথেই জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযি, মিশকাত, আন নেয়ামাতুল কুবরা)
৫.সাইয়্যিদুত ত্বয়িফা হযরত জুনাইদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন –
“যে ব্যক্তি মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আয়োজনে উপস্থিত হল এবং উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন করলো। সে তার ঈমানের দ্বারা সাফল্য লাভ করবে অর্থাৎ সে বেহেশ্তি হবে।” (সুবহানাল্লাহ্) (আন্ নি’মাতুল কুবরা)
বিস্তারিত

সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা কুল কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত (৬)

সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করা কুল কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত (৬)
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يَااَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مّـِنْ رَّبّـِكُمْ وَشِفَاء لّـِمَا فِى الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مّـِمَّا يَـجْمَعُوْنَ.
অর্থ: “হে মানুষেরা! হে সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী! অবশ্যই তোমাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ আরোগ্যদানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াত দানকারী এবং সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য, খাছ করে ঈমানদারদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ  রহমতস্বরূপ আমার যিনি হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন। (সুবহানাল্লাহ) হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, ফযল, করম ও রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে, ঈদ পালন করে তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা, ঈদ পালন করাটা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে উত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৫৮)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অজুদ মুবারক উনার সম্মানার্থে খুশি প্রকাশ করা, ঈদ পালন করা কায়িনাতবাসীর সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মর্যাদা, ফাযায়েল-ফযীলতের দিক থেকে যেমনিভাবে কায়িনাত মাঝে একক অজুদ মুবারক, তেমনিভাবে উনার জন্য খুশি প্রকাশ করাটাও মাখলুকাতের সমস্ত আমল ও ইবাদত হতে সর্বশ্রেষ্ঠ এবং সর্বোত্তম। (সুবহানাল্লাহ)

এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما انه كان يحدث ذات يوم فى بيته وقائع ولادته صلى الله عليه وسلم لقوم فيستبشرون ويحمدون الله ويصلون عليه صلى الله عليه وسلم فاذا جاء النبى صلى الله عليه وسلم قال حلت لكم شفاعتى.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ  উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করে উনার নিজগৃহে ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে সমবেত করে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদত শরীফ উনার ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছিলেন। এতে শ্রবণকারীগণ আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা তথা তাছবীহ-তাহলীল পাঠ করছিলেন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর (পবিত্র ছলাত শরীফ ও পবিত্র সালাম শরীফ তথা) পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করছিলেন। এমন সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তথায় উপস্থিত হয়ে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে খুশি প্রকাশ করতে দেখে বললেন, আপনাদের জন্য আমার শাফায়াত মুবারক ওয়াজিব।” সুবহানাল্লাহ! (ছুবুলুল হুদা ফী মাওলিদে মুস্তফা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)

অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্য খুশি প্রকাশ করলে তথা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করলে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শাফায়াত মুবারক ওয়াজিব হয়। আর যার জন্য শাফায়াত মুবারক ওয়াজিব হয়, উনার যিন্দেগীর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে মাছূম নিষ্পাপ বানিয়ে বিনা হিসেবে উনাকে জান্নাতে পৌছে দেয়া হবে। অর্থাৎ যে বা যারাই পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করবেন, তারা প্রত্যেকেই বিনা শর্তে নাজাত লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ!

তাই নির্দ্বিধায় বলা যায়, সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনের মাধ্যমে যাবতীয় নিয়ামত মুবারক লাভ হয়। আর এজন্যই সুমহান সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাকে কুল-কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ইবাদত হিসেবে ঘোষণা মুবারক দেয়া হয়েছে।  

বিস্তারিত

মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১২ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পরিচিতি মুবারক

মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১২ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত পরিচিতি মুবারক
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলইহিমুস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত ১২ ইমাম আলাইহিমুস সালাম উনারা হচ্ছেন:
১. ইমামুল আউওয়াল আসাদুল্লাহিল গালিব সাইয়্যিদুনা হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম।
২. ইমামুছ ছানী সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম।
৩. ইমামুছ ছালিছ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম।
৪. ইমামুর রাবি' সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী আওসাত্ব জয়নুল আবেদীন আলাইহিস সালাম।
৫. ইমামুল খামিস সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ বাকির আলাইহিস সালাম।
৬. ইমামুস সাদিস সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জা'ফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম।
৭. ইমামুস সাবি' সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম।
৮. ইমামুছ ছামিন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী রেযা আলাইহিস সালাম।
৯. ইমামুত তাসি' সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ ত্বক্বী আলাইহিস সালাম,
১০. ইমামুল আ'শির সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম আলী নক্বী আলাইহিস সালাম।
১১. ইমামুল হাদি আ'শার সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আসাকারী আলাইহিস সালাম, এবং
১২. ইমামুছ ছানি আ'শার সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহম্মদ মাহদী আলাইহিস সালাম। (যিনি শেষ যামানায় আসবেন।)
বিস্তারিত

পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার বরকতময় ইতিহাস

পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার বরকতময় ইতিহাস
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমতুল্লিল আলামীন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ১১ হিজরী সনের পবিত্র মুহররম শরীফ মাসে তৃতীয় সপ্তাহে মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। এরপর ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। অতঃপর পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার তৃতীয় সপ্তাহে আবার মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন। যার কারণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন যে, সত্যিই কী সাইয়্যিদুনা হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি  বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করবেন?

মহান আল্লাহ পাক তিনি বান্দা-বান্দী উনাদের প্রতি দয়া করে উম্মত উনাদের প্রতি আরো বেশি রহমতে খাছ নাযিল করার লক্ষ্যে আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার অর্থাৎ আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার দিন সকালে ছিহহাতী শান মুবারক হাদিয়া করেন। যার কারণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অত্যধিক খুশি হন। 

আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ছিহহাতী শান মুবারক দেখে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উনার মুবারক খিদমতে অনেক হাদিয়া মুবারক পেশ করেন। এ ব্যতীত অন্যান্যদেরকেও অনেক টাকা পয়সা দান করেন। সুবহানাল্লাহ!

স্বয়ং আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করে হযরত উম্মাহাতুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম এবং হযরত আহলে বাইত শরীফ আলাইহিন্নাস সালাম ও আলাইহিমুস সালাম উনাদের নিয়ে সকাল বেলা নাস্তা মুবারক করেন। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের খোঁজ-খবর নেন এবং খুশি  মুবারক প্রকাশ করেন। যার কারণে পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার দিন ঈদ বা খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে খাছ সুন্নত মুবারক। অবশ্য একই দিন বাদ আছর থেকে পুনরায় তিনি মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং সে মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেই পবিত্র ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

উল্লেখিত বরকতময় ঘটনা থেকে প্রমাণিত হলো যে, পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার দিন খুশি প্রকাশ করা হচ্ছে খাছ সুন্নত মুবারক। হাদিয়া দেয়া ও দান-ছদক্বা করা সুন্নত ও অনেক ফযীলতের কারণ। 

কিন্তু কিছু বদ আক্বীদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা বলে থাকে, পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাঊযুবিল্লাহ! 

এর কারণস্বরূপ তারা বলে থাকে, ওই দিন আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেন এবং সে মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করেই পবিত্র বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!

প্রকৃতপক্ষে তারা বিষয়টি সঠিকভাবে না বুঝার কারণেই একথা বলে থাকে। যেখানে স্বয়ং আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত উম্মাহাতুল মু'মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা, হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিন্নাস সালাম উনারা এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা সকলেই পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার দিন খুশি প্রকাশ করলেন সেখানে পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করাকে বিদয়াত বলা গুমরাহী ব্যতীত কিছু নয়। 

মূলত, পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ উনার দিন ঈদ উদযাপন বা খুশি প্রকাশ করা খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সকলকেই সঠিক বুঝ দান করুন। (আমীন)

বিস্তারিত

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে একটি বিশেষ দিন ‘পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ’

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে একটি বিশেষ দিন ‘পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ’
'পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ' বলতে পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ বুধবার উনাকে বলা হয়। পবিত্র ছফর শরীফ মাস ব্যতীত আর কোনো মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবারকে 'পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ' বলা হয় না। যেমন 'আশূরা' শব্দটি আরবী 'আশারাতুন' শব্দ হতে এসেছে; যার অর্থ দশ বা দশম। কিন্তু ইছতিলাহী বা পারিভাষিক অর্থে 'আশূরা' শরীফ বলতে শুধুমাত্র পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস উনার ১০ তারিখ দিনটিকে বুঝানো হয়ে থাকে। অন্য কোনো মাস উনার ১০ তারিখকে পবিত্র আশূরা শরীফ বলা হয় না।

মূলত, পবিত্র মুহররমুল হারাম শরীফ মাস উনার ১০ তারিখ দিনটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদাম-িত হওয়ার কারণে যেমনিভাবে উক্ত দিনটি 'আশূরা' শরীফ নামে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে, তদ্রƒপ পবিত্র ছফর শরীফ মাস উনার শেষ ইয়াওমুল আরবিয়া বা বুধবার দিনটিও বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদামণ্ডিত হওয়ার কারণে 'পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ' হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। আর সে বিশেষ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদামণ্ডিত বিষয়টি হলো, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দীর্ঘদিন মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করার পর পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ দিনে ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।

অতঃপর গোসল মুবারক করত খাওয়া-দাওয়া করেন। পরে পবিত্র মসজিদে নববী শরীফ উনার মধ্যে মুবারক তাশরীফ রাখেন। তিনি ছিহহাতী শান মুবারক প্রকাশ করার কারণে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অত্যন্ত আনন্দিত হন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে শুকরিয়া আদায় করেন এবং এ উপলক্ষে উনাদের সাধ্যমতো আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক খিদমতে হাদিয়া পেশ করেন। আর আলাদাভাবে গরিব- মিসকিনদেরকেও দান-ছদকা করেন।

কাজেই এ দিনটিতে উম্মতের জন্য উনাদের নবী ও রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বত ও সন্তুষ্টি মুবারক লাভের উদ্দেশ্যে সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী হাদিয়া এবং দান-ছদকা করা ও খুশি প্রকাশ করা পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।

বিস্তারিত

সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে সবচেয়ে বড় ঈদের দিন কোনটি? দুই ঈদ ছাড়া আর কতটি ঈদ আছে?

সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে সবচেয়ে বড় ঈদের দিন কোনটি? দুই ঈদ ছাড়া আর কতটি ঈদ আছে?
পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবচেয়ে বড় ঈদ তথা সাইয়্যিদে ঈদে আ’যম, ঈদে আকবর অর্থাৎ “সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ”। আর সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী মু’মিনগণ উনাদের জন্য বছরে ঈদের দিন বা খুশির দিন হলো- জুমুয়ার দিন শুক্রবার ৫০দিন, সোমবার শরীফ ৫০দিন, আরাফার ১দিন, ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ১দিন, ঈদুল ফিতর ১দিন, ঈদুল আযহা বা কুরবানীর ৩দিন, ফরয রোযার ২৯ বা ৩০ দিন, সুন্নত রোযার ৪২ দিন সর্বমোট ১৭৭ বা ১৭৮ দিন। অর্থাৎ বছরের প্রায় অর্ধেক দিনই মু’মিন-মুসলমানের জন্য ঈদ বা খুশির দিন। কারো প্রশ্ন জাগতে পারে সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই সবচেয়ে বড় ঈদ হিসেবে শরীয়তে দলীল আছে কি? তাছাড়া এত ঈদের দলীল কোথায় আছে? জী অবশ্যই সম্মানিত ইসলামী শরীয়তে বর্ণিত সব ঈদেরই বর্ণনা ও দলীল রয়েছে। যারা বলে “শরীয়তে দু’ঈদ ব্যতীত অন্য কোন ঈদ নেই” তারা প্রকৃতপক্ষে কিল্লতে ইলম, কিল্লতে ফাহম (কম জ্ঞান, কম বুঝ) অর্থাৎ কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ উনাদের সম্পর্কে নেহায়েত অজ্ঞ হওয়ার কারণেই তারা একথা বলে থাকে। কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ দ্বারা যেভাবে দু’ঈদ ছাবিত হয়েছে বা রয়েছে ঠিক একইভাবে অন্যান্য ঈদ এবং ঈদে মীলাদুন নবী সাইয়্যিদু ঈদে আ’যম ও ঈদে আকবর হিসেবে ছাবিত বা প্রমাণিত হয়েছে। যেমন, ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর সম্পর্কে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عن انس رضى الله تعالى عنه قال قدم النبى صلى الله عليه وسلم المدينة ولهم يومان يلعبون فيهما فقال ما هذان اليومان قالوا كنا نلعب فيهما فى الجاهلية فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم قد ابدل كم الله بهما خيرا منهما يوم الاضحى ويوم الفطر. অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন মদীনা শরীফ উনার মধ্যে (হিযরত মুবারক করেন) তাশরীফ নিলেন (তখন তিনি দেখতে পেলেন যে) পবিত্র মদীনা শরীফবাসীগণ সেখানে দু’দিন খেলাধুলা করে থাকে। অতঃপর তিনি বললেন, এ দু’দিন কোন দিন? তারা বললো, আমরা এ দু’দিনে জাহিলী যুগে খেলাধুলা করতাম। তখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি এ দু’দিনের পরিবর্তে তোমাদের জন্য উত্তম দু’দিন দিয়েছেন, তাহলো ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর।” (আবু দাউদ, মিশকাত) এরপর হতে মুসলমানদের মধ্যে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর পালিত হয়ে আসছে। মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তরফ থেকে ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর নির্ধারণ করে দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামই হাক্বীক্বী ঈদ। কারণ, সেই দিন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে তাশরীফ আনেন। উল্লেখ্য, হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি, যমীনে আগমন ও বিদায় শুক্রবার দিন হওয়ার কারণে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে শুক্রবার দিনকে ঈদের দিন বা খুশির দিন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عن عبيد بن السباق مرسلا وعن ابن عباس رضى الله تعالى عنه متصلا قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم فى جمعة من الجمع يا معشر المسلمين ان هذا يوم جعله الله عيدا فاغسلوا ومن كان عنده طيب فلايضره ان يمس منه وعليكم بالسواك. অর্থ: “হযরত ওবায়েদ বিন সাব্বাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুরসাল সনদে বর্ণনা করেন, আর হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুত্তাছিল সনদে বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক জুমুয়ার দিনে বলেন, ‘হে মুসলমান সম্প্রদায়! এটি (জুমুয়ার দিন) এমন একটি দিন যাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি ঈদ স্বরূপ নির্ধারণ করেছেন। সুতরাং তোমরা এ দিনে গোসল করবে এবং যার নিকট কোন সুগন্ধি (আতর) আছে সে কোনরূপ অসুবিধা মনে না করে তা মেখে নিবে বা ব্যবহার করবে আর অবশ্যই তোমরা মিসওয়াক করবে।” (ইবনে মাজাহ শরীফ, মুয়াত্তা মালিক শরীফ, মিশকাত শরীফ) পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عن ابى ليلة بن عبد المنذر قال قال النبى صلى الله عليه وسلم ان يوم الجمعة سيد الايام واعظمها عند الله وهو اعظم عند الله من يوم الاضحى ويوم الفطر فيه خمس خلال خلق الله فيه ادم واهبط الله فيه ادم الى الارض وفيه توفى الله ادم وفيه ساعة لايسأل العبد فيها شيئا الا اعطاه ما لايسأل حراما وفيه تقوم الساعة ما من ملك مقرب ولا سماء ولا ارض ولا رياح ولا جبال ولا بحر الا هو مشفق من يوم الجمعة. অর্থ: “হযরত আবু লায়লা ইবনে আব্দুল মুনযির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন যে, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, জুমুয়ার দিন সকল দিনের সর্দার এবং সকল দিন অপেক্ষা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। এটি ঈদুল আযহার দিন ও ঈদুল ফিতরের দিন অপেক্ষাও মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট অধিক শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত। এ দিনটিতে পাঁচটি (গুরুত্বপূর্ণ) বিষয় রয়েছে, (১) এ দিনে মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করেছেন, (২) এ দিনে উনাকে যমীনে প্রেরণ করেছেন, (৩) এ দিনে উনাকে ওফাত দান করেছেন, (৪) এ দিনটিতে এমন একটি সময় রয়েছে যে সময়টিতে বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কিছু চাইলে তিনি অবশ্যই তাকে তা দান করেন যে পর্যন্ত না সে হারাম কিছু চায় এবং (৫) এ দিনেই ক্বিয়ামত সংঘটিত হবে। এমন কোন ফেরেশতা নেই, আসমান নেই, যমীন নেই, বাতাস নেই, পাহাড় নেই, সমুদ্র নেই, যে জুমুয়ার দিন সম্পর্কে ভীত নয়।” (ইবনে মাজাহ শরীফ, মিশকাত শরীফ) স্মরণীয়, হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার সাথে সম্পর্কযুক্ত থাকার কারণে যদি জুমুয়ার দিন ঈদের দিন বা খুশির দিন হতে পারে। শুধু তাই নয় এমনকি ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার চেয়েও সম্মানিত, ফযীলতপ্রাপ্ত ও মহান হয় তাহলে যে মহান ব্যক্তিত্বের উছীলায় হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার যমীনে আগমন ঘটলো সেই মহান ব্যক্তির সাথে যেই দিনটি সম্পর্কযুক্ত সেই দিনটির সম্মান, ফযীলত ও মহত্ত্ব কতটুকু হবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অর্থাৎ তা অবশ্যই ঈদের দিন হবে। এমনকি জুমুয়ার দিন অপেক্ষাও তা হবে শ্রেষ্ঠ ও সম্মানিত ঈদের দিন। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, عن ابن عباس رضى الله تعالى عنه انه قرأ "اليوم اكملت لكم دينكم" الاية وعنده يهودى فقال لونزلت هذه الاية علينا لاتخذناها عيدا فقال ابن عباس فانها نزلت فى يوم عيدين فى يوم جمعة ويوم عرفة. অর্থ: “হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা اليوم اكملت لكم دينكم الاية. “আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম” এ আয়াত শরীফটি শেষ পর্যন্ত পাঠ করলেন। তখন উনার নিকট এক ইহুদী ছিল সে বলে উঠলো, “যদি এই পবিত্র আয়াত শরীফ আমাদের ইহুদী সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হতো আমরা পবিত্র আয়াত শরীফ নাযিলের দিনটিকে “ঈদ” বলে ঘোষণা করতাম।” এটা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, এ পবিত্র আয়াত শরীফ সেই দিন নাযিল হয়েছে যেদিন এক সাথে দু’ঈদ ছিল- (১) জুমুয়ার দিন এবং (২) আরাফার দিন।” (তিরমিযী শরীফ) এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মুহম্মদীর জন্য জুমুয়ার দিনের সাথে সাথে আরাফার দিনকেও ঈদের দিন হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বুখারী ও মুসলিম শরীফ উনার মধ্যে হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কর্তৃক বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরাফার দিনকে উম্মতে মুহম্মদীর জন্য ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, للصائم فرحتان قرحة عند فطره وفرحة عند لقاء ربه. অর্থ: “রোযাদারের জন্য দু’টি খুশি রয়েছে। একটি তার ফিতর বা ইফতারের সময় এবং অপরটি তার রবের সাক্ষাতের সময়।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ) এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে রোযাদারের জন্য দু’টি খুশি বা ঈদের কথা বলা হয়েছে। একটি হচ্ছে তার ইন্তিকালের পর মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সাক্ষাতের সময়। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে তার ফিতর বা ইফতারের সময়। আর ফিতর বা ইফতার হচ্ছে দু’প্রকার (১) কুবরা, (২) ছুগরা। কুবরা হচ্ছে ঈদুল ফিতর যা হাদীছ শরীফ দ্বারা ঈদের দিন হিসেবে প্রমাণিত। আর ছুগরা হচ্ছে যা রোযাদার প্রতিদিন মাগরিবের সময় করে থাকে। এটা প্রতি বছরে ২৯ দিন অথবা ৩০ দিন হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, ফিতর অর্থ রোযা ভঙ্গ করা। ফিতরকেই ইফতার বলা হয়। রোযাদার মাহে রমাদ্বান শরীফ পূর্ণ এক মাস অর্থাৎ ২৯ দিন বা ৩০ দিন রোযা রাখার পর পহেলা শাওওয়াল দিনের বেলা পানাহার প্রভৃতি ইন্দ্রিয় তৃপ্তিকর কার্যের মাধ্যমে রোযা ভঙ্গ করতঃ খুশি বা ঈদ করে। এটাই ইফতারীয়ে কুবরা যা ঈদুল ফিতর নামে পরিচিত। আর রোযাদার পূর্ণ একদিন অর্থাৎ ছুবহে ছাদিক হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযা রাখার পর সন্ধা বেলা পানাহার প্রভৃতি ইন্দ্রিয় তৃপ্তিকর কার্যের মাধ্যমে রোযা ভঙ্গ করতঃ খুশি বা ঈদ করে। এটাই ইফতারীয়ে ছুগরা বা ঈদুল লাইল নামে অভিহিত। ইফতারীয়ে ছুগরা বা ঈদুল লাইল ফরয রোযা হিসেবে বছরে ২৯ বা ৩০ দিন। আর সুন্নত রোযা হিসেবে কমপক্ষে মুহররম মাসে ৯, ১০ অথবা ১০, ১১ তারিখ ২টি এবং তার সাথে আরো ১টি মোট ৩টি, ‘শাওওয়াল শরীফ মাসে ৬টি, যিলহজ্জ মাসে ১ হতে ৯ তারিখ পর্যন্ত ৯টি এবং অন্যান্য মাসসমূহে ৩টি করে ২৪টি সর্বমোট ৪২ দিন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, من صام رمضان ثم اتبعه ستا من شوال كان كصيام الدهر. অর্থ: “যে ব্যক্তি রমাদ্বান শরীফ মাসের রোযা রাখার পর শাওওয়াল শরীফ মাস উনার ছয়টি রোযা রাখলে সে যেন পূর্ণ বছর রোযা রাখলো।” (মুসলিম শরীফ) পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার আরো বর্ণিত রয়েছে, عن حفصة رضى الله تعالى عنها قالت اربع لم تكن يدعهن النبى صلى الله عليه وسلم صيام عاشوراء والعشر وثلثة ايام من كل شهر وركعتان قبل الفجر. অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন হযরত হাফসা আলাইহাস সালাম তিনি বর্ণনা করেন, “চারটি জিনিষ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনো ছাড়েননি। (১) যিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের রোযা, (অর্থাৎ প্রথম নয় দিন) (২) আশুরার দিনের রোযা, (৩) প্রত্যেক মাসে তিন দিন রোযা, (৪) ফযরের ফরয নামযের পূর্বে দু’রাকায়াত সুন্নত নামায।” (নাসাঈ, মিশকাত শরীফ) পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, لكل مؤمن فى كل شهر اربعة اعياد او خمسة اعياد. অর্থ: “প্রত্যেক মু’মিন উনাদের জন্য প্রতি মাসে চারটি ঈদ অথবা পাঁচটি ঈদ রয়েছে।” (হাশিয়ায়ে হিদায়া মা’য়াদ দিরায়া, ফতহুল ক্বাদীর মা’য়াল কিফায়া) এ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন উনাদের জন্য প্রতি মাসে ৪টি বা ৫টি ঈদের কথা বলা হয়েছে। কারণ, প্রতি মাসে সোমবার শরীফ ৪টি বা ৫টি হয়ে থাকে। আর শুক্রবারও প্রতি মাসে ৪টি বা ৫টি হয়ে থাকে। উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফসমূহের দ্বারা ছাবিত হলো, মু’মিনগণ উনাদের ঈদ শুধু দু’টিই নয়। অর্থাৎ ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরই নয় আরো অনেক ঈদ রয়েছে। শুক্রবার মু’মিনগণ উনাদের ঈদের দিন। আরবী বা চান্দ্র বছর অনুযায়ী এক বছরে প্রায় ৫০টি শুক্রবার হয়ে থাকে। সে হিসেবে এ ৫০টি দিনও মু’মিনগণ উনাদের জন্য ঈদের দিন। একইভাবে সোমবার শরীফ দিনও মু’মিনগণ উনাদের ঈদের দিন। চান্দ্র বছর অনুযায়ী এক বছরে প্রায় ৫০টি সোমবার শরীফ হয়ে থাকে। সে হিসেবে এ ৫০টি দিনই মু’মিনগণ উনাদের জন্য ঈদের দিন। আর আরবী বছরে ১২টি মাসের মধ্যে একটি মাস হচ্ছে রমাদ্বান শরীফ। যা ২৯ বা ৩০ দিনে হয়ে থাকে। এবং এ ২৯ বা ৩০ দিন রোযাদার মু’মিনগণ উনাদের জন্য খুশির দিন বা ঈদের দিন। সুন্নত রোযার ৪২ দিন খুশির বা ঈদের দিন। মু’মিনগণ উনাদের জন্য আরাফার দিন ঈদের দিন বা খুশির দিন। ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ঈদের দিন বা খুশির দিন। এখন সর্বমোট মু’মিনগণ উনাদের জন্য ঈদের দিন বা খুশির দিন হলো- শুক্রবার ৫০দিন, সোমবার শরীফ ৫০দিন, আরাফার ১দিন, ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ ১দিন, ঈদুল ফিতর ১দিন, ঈদুল আযহা বা কুরবানীর ৩দিন, ফরয রোযার ২৯ বা ৩০ দিন, সুন্নত রোযার ৪২ দিন সর্বমোট ১৭৭ বা ১৭৮ দিন। অর্থাৎ বছরের প্রায় অর্ধেক দিনই মু’মিন-মুসলমানের জন্য ঈদ বা খুশির দিন। অতএব, উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হলো যে, যারা বলে “শরীয়তে দু’ঈদ অর্থাৎ ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর ব্যতীত অন্য কোন ঈদ নেই।” তাদের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ উনাদের খিলাফ। প্রকৃতপক্ষে কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মু’মিন, মুসলমানদের জন্য ঈদ শুধুমাত্র দু’টিই নয়, আরোও রয়েছে। কাজেই ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতর এ দু’ঈদ ব্যতীত অন্যান্য ঈদকে অস্বীকার করার অর্থ হলো, কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ উনাদেরকেই অস্বীকার করা। আর যারা কুরআন শরীফ, সুন্নাহ শরীফ উনাদেরকে অস্বীকার করে তারা মু’মিন-মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত নয়।
বিস্তারিত

প্রখ্যাত মুসলিম ইতিহাসবিদের লিখনিতে ঈদে মিলাদে হাবিবী সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম

প্রখ্যাত মুসলিম ইতিহাসবিদের লিখনিতে ঈদে মিলাদে হাবিবী সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম
১. ৭ম শতকের ইতিহাসবিদ শায়েখ আবু আল আব্বাস আল আযাফি এবং আবু আল কাসিম আল আযাফি ( সার্জারির জনক ) তাঁদের কিতাব আল দুরর আল মুনাজ্জাম কিতাবে লিখেন - " মক্কা শরিফে ঈদে মিলাদুননবির দিন ধার্মিক ওমরাহ হজ্জ্বযাত্রী এবং পর্যটকেরা দেখতেন যে সকল ধরনের কার্য্যক্রম বন্ধ এমনকি ক্রয় -বিক্রয় হতনা ,তাঁদের ব্যতিত যারা সম্মানিত জন্মদিন স্থান দেখতেন এবং সেখানে জড় হয়ে দেখতেন । এ দিন পবিত্র কাবা শরীফ সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হত। " ২. ৮ম শতকের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ ইবনে বতুতা তাঁর রিহলায় লিখেন- " প্রতি জুম্মা নামাজের পর এবং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইই ওয়া সাল্লাম উনার জন্মদিনে বানু শায়বা এর প্রধান কতৃক পবিত্র কাবা শরিফের দরজা খোলা হত। মক্কা শরিফের বিচারক নজম আল দীন মুহম্মদ ইবনে আল ইমাম মুহুয়ি আল দিন আল তাবারি হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বংশধর এবং সাধারন জনগনের মাঝে খাবার বিতরন করতেন।" ৩. ইতিহাসবিদ শায়েখ ইবনে যাহিরা তাঁর ' জামি আল লতিফ ফি ফাদলি মক্কাতা ওয়া আহলিহা" শায়েখ আল হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর ' আল মাওলিদ আল শরিফ আল মুনাজ্জাম ' এবং ইতিহাসবিদ শায়েখ আল নাহরাওয়ালি তাঁর 'আল ইমাম বি আলাম বায়েত আল্লাহ আল হারাম' তাঁদের লিখিত কিতাবে বলেন- " প্রতি বছর ১২ রবিউল আউওয়াল শরিফে বাদ মাগরীব ৪ জন সুন্নি মাযহাব স্কলার ,বিচারক , ফিক্ববিদ, শায়েখান , শিক্ষক , ছাত্র , ম্যাজিস্ট্রেট , বিজ্ঞজন এবং সাধারন মুসলমানগন মসজিদের বাহিরে আসতেন এবং তাসবীহ-তাহলীল এর সাথে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মস্থান বাড়ি পরিদর্শন করতেন । বাড়িতে যাওয়ার পথ আলোকসজ্জা করা হত । সকলে উত্তম পোষাক পরিধান করতেন এবং সাথে তাঁদের সন্তানদের নিতেন। পবিত্র জন্মস্থানের ভিতরে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিলাদতি শান প্রকাশের সময়কার বিভিন্ন বিশয়াদি বিশেষবভাবে বর্ননা করা হত । তারপর অটোমান সাম্রাজ্যের জন্য সবাই দোয়া করতেন এবং বিনয়ের সহিত দোয়া করা হত । ইশা নামাজের কিছুক্ষন পুর্বে সকলে মসজিদে চলে আসতেন ( যা থাকত লোকে লোকারন্য ) এবং সারিবদ্ধভাবে মাকামে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম এর সামনে বসতেন । https://goo.gl/Vlv5vf
বিস্তারিত

মক্কাবাসীদের মিলাদ পালন

 মক্কাবাসীদের মিলাদ পালন
ইমাম শামসুদ্দীন সাখাবীর সূত্রে মোল্লা আলী ক্বা্রী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, মক্কা বাসীরা অধিকতর মঙ্গল ও বরকতের অধিকারী।এই পবিত্র নগরীর দিকে মুসলিম মিল্লাত অতি আগ্রহের মাধ্যমে অগ্রসর হও্য়ার চেষ্টা করে।এটার কারন এই যে,এখানে হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর মৌলুদ শরীফ(পবিত্র জন্মস্থান)বিদ্যমান।এ পবিত্র জন্মস্থানটি তৎকালীন ‘সুকুল লাইল’নামে খ্যাত ছিল।যা বর্তমানে সাফা ও মারওয়া পাহাড়ের পূর্ব পাশে ‘মাকতবা আল মক্কা আল মুকাররমা’ নামে দালান হিসেবে অবস্থিত। উক্ত পবিত্র স্থানে লোকেরা দলে দলে অতি আগ্রহের সাথে মনোবাসনা নিয়ে যিয়ারতের উদ্দেশ্যে গমন করতেন।বিশেষ করে ১২ ই রবিউল আউয়াল শরীফে ঈদে মিলাদুন্নাবী’র দিনে অনেক গুরুত্বসহকারে লোকজন মাহফিলের আয়োজন করতেন।ধনী-গরীব,আমীর-প্রজা সকলেই এতে অংশগ্রহন করতেন। তৎকালীন মক্কা নগরীর কাযী এবং প্রখ্যাত আলেম আল বুরহানী আশ-শাফেয়ী যিয়ারতকারী ও ঈদে মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা মাহফিলে অংশগ্রহনকারীদেরকে তাবাররুক বা খানা খাওয়ানোর ব্যাবস্থা করতেন।আর ঈদে মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা উপলক্ষে হেযাযের আমীর তাঁর বাসভবনে হেযাযের নাগরীকদের জন্য ঈদে মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা উপলক্ষে বিশাল খাবারের আয়োজন করতেন এবং এই নিয়ত করতেন যে,এই মিলাদে পাকের দ্বা্রা তাঁর অনেক মুসিবত দূরীভূত হবে।তাঁর পরবর্তীতে তাঁর উত্তরসূরী পূত্র “আল-জমালী” এই মাহফিলের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন।
বিস্তারিত

মাহনামা তরিক্বত’ লাহোর পত্রিকায় মক্কা শরীফে জশনে ঈদে মিলাদুন্নাবী পালনের বর্ণনা

মাহনামা তরিক্বত’ লাহোর পত্রিকায় মক্কা শরীফে জশনে ঈদে মিলাদুন্নাবী পালনের বর্ণনা
১৯৭১ সালের জানুয়ারী মাসে ‘মাহনামা তরিক্বত’ লাহোর পত্রিকার রিপোর্টের মধ্যে মক্কা শরীফের জশনে ঈদে মিলাদুন্নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা পালনের বর্ণনা এভাবে দেন যে, “হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর শুভাগমন দিবসে মক্কা শরীফের মধ্যে বড় ধরনের আনন্দ উৎসব পালন করা হয়।ঐ দিবসকে ‘ঈদে ইয়াওমে বেলাদতে রাসূল’ বলা হয়।ঐ দিন চারিদিকে পতাকা উড়তে থাকে।হেরেম শরীফের গভর্ণর এবং হেযাযের কমান্ডারসহ আরো অন্যান্য কর্মকর্তাগণ আভিজাত্য পোশাক পরিধান করে মাহফিলে উপস্থিত হতেন এবং হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামা এর ‘পবিত্র জন্মস্থানে’-এ গিয়ে কিছুক্ষন নাত-গজল পরিবেশন শেষে ফিরে যেতেন।হেরেম শরীফ থেকে ‘মৌলিদুন্নবী’(পবিত্র জন্মস্থান) পর্যন্ত দুই সাড়িতে আলোকসজ্জা করা হত।ঐ মৌলিদ শরীফের স্থান নূরের আলোর ভূমিতে পরিণত হত এবং মৌলিদ শরীফের স্থানে সু-কন্ঠে প্রিয় নবীর মিলাদ পালন করত।এ অবস্থায় রাত দুইটা পর্যন্ত মিলাদখানী,নাত এবং বিভিন্ন খত্‌ম পড়ত।দলে দলে লোকজন এসে নাত পরিবেশন করত।১১ রবিউল আউয়াল শরীফের মাগরীব হতে ১২ ই রবিউল আউয়াল শরীফের আসর পর্যন্ত ২১ টি তোপধ্বনি করা হত।মক্কা শরীফের ঘরে ঘরে মিলাদুন্নাবী উপলক্ষে খুশি আনন্দ এমনকি স্থানে স্থানে মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হত।”
বিস্তারিত

ঈদে মীলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উনার ইতিহাস

 ঈদে মীলাদুন্নবী সল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম উনার ইতিহাস

১. হযরত আল্লামা মোল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেন -

“ মদিনাবাসী ঈদে মিলাদুন্নবীতে খুবই আগ্রহ ,উৎসাহ ও আনন্দের সহিত এ দিবস উদযাপন করতেন “।
মাওরিদ আর রাওয়ী ফি মাওলিদ আন নাবী – পৃ-২৯
২. হযরত ইবনে যাওজী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন –
"হারামাইন শরীফাইন এর (মক্কা ও মদিনা) , মিসর , ইয়েমেন ও সিরিয়ার এবং আরব এর পূর্ব ও পশ্চিম জনপদের অধিবাসীরা, নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম উদযাপন করতেন। তাঁরা রবিউল আওয়াল এর চাঁদ দেখা আনন্দিত হতেন , গোসল করতেন এবং তাঁরা সুন্দর পোষাক পরিধান করতেন , সুগন্ধী মাখতেন দান করতেন এবং হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিভিন্ন বিষয় শুনে জাহির করতেন। ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করে করে যে নিরাপত্তা ও স্বস্থি , জীবিকার মানোন্নয়ন , শিশু ও সম্পদ বৃদ্ধি এবং শহরের শান্তি ও তাদের সাফল্য লাভ হয়েছে তা প্রকাশ করতেন।

তাফসীরে রুহুল বয়ান – আল্লামা ইসলাইল হিক্কি ( ভলিউম ৯ ,পৃ ৫৬ )

আদ দুররুল মুনাজ্জাম পৃ ১০০/১০১
আল মিলাদুন্নবি ,পৃ ৫৮
৩. আজ থেকে ৭০০ বছর পুর্বে জড়ো হয়ে ঈদে মিলাদুন্নবি পালন হত । ওমর বিন মুল্লা মুহম্মদ মউসুলি রহমতুল্লাহি আলাইহি এ দিবসকে নিয়মিতভাবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে জারী রাখার প্রচলন চালু করেন । উনার অনুসরনে ইসলামের অমর সিপাহসালার সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বোনজামাই আরবলের বাদশাহ মালিক আবু সাঈদ মুজাফফর আল দীন রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মিলাদুন্নবি অনুষ্ঠান পালন প্রচলন করেন । ( তাঁরা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রথম করেছেন কিন্তু তাঁর পুর্ব থেকেও ঈদে মিলাদুন্নবি পালন হত )
'তারিখ-ই-মারাত আয জামান'' এর মতে ঐ অনুষ্ঠানে কোটি কোটি টাকা খরছ করা হত । হিজরি ৭ম শতকের শুরুতে সে যুগের বিখ্যাত ওলামা ও প্রসিদ্ধ ফোজালাগণের মধ্যে অন্যতম ব্যক্তিত্ব আবুল খাত্তাব উমর বিন হাসান দাওহিয়া ক্বলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি ঈদে মিলাদুন্নবির উপর একটি বই লিখেন যার নাম দেন ‘আত-তানভির ফি মাওলিদিল সিরাজ আন নাজির। তিনি বাদশাহকে এই বই উপহার প্রদান করেন। তিনি নিজে গ্রন্থখানা পাঠ করে বাদশাহকে শুনান। বাদশাহ প্রীত হয়ে তাঁকে এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা উপহার দেন।“
শুধু আরবলের বাদশাহ কিংবা মিশরের সুলতান নন , সুলতান আবু হামু মুসা তালামসানী এবং পুর্বেকার আন্দালুস ও আকসার শাসকেরা ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করতেন। এ দিবসে উনারা হাজার হাজার স্বর্নমুদ্রা ব্যয় করতেন। আল্লামা ইবনে জুজরী রহমতুল্লাহি আলাইহি এর সাক্ষী ছিলেন। আবদুল্লাহ তন্সী সুম্মা তালামসানী এ উদযাপনের উপর বিস্তারিত একটি বই লিখেছেন যার নাম দিয়েছেন “ রাহ আল আরওয়াহ “
রেফারেন্স –
১. সুবুল আল হুদা ওয়ার রিশাদ ফি সিরাহ খায়ের আল-ইবাদ – মুহব্বদ বিন আলী ইউসুফ দামিশকি
২. আদ – দূরর আল – মুনাজ্জাম ফি হুকমী মাওলিদিন নাবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
৩. আনওয়ার আস সাতিয়া ১৩০৭ হিজরি , পৃ ২৬১ ,
৪. “ফয়ূযুল হারামাইন” কিতাবে শাহ ওয়ালী উল্লাহ মোহাদ্দিসে দেহলভী রহমাতুল্লাহে আলাইহি আরো বলেনঃ
“আমি এর পূর্বে মক্কা মু’আযযামায় বেলাদত শরীফের বরকতময় ঘরে উপস্থিত ছিলাম। আর সেখানে লোকজন সমবেত হয়ে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর একত্রে দরুদ শরীফ পাঠা করছিলেন। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শুভাগমনের সময় সংঘটিত অলৌকিক ঘটনাবলী ও তার নবুয়ত প্রকাশের পূর্বে সংঘটিত ঘটনাবলী আলোচনা করছিলেন। তারপর আমি সেখানে এক মিশ্র নূরের ঝলক প্রত্যক্ষ করলাম। আমি বলতে পারিনি যে, এ নূরগুলো চর্মচক্ষে দেখেছিলাম এবং এটাও বলতে পারি না যে, এগুলো কেবল মাত্র অন্তর চক্ষুতে দেখেছিলাম। এ দুটোর মধ্যে প্রকৃত ব্যাপার কি ছিল, তা আল্লাহ পাকই ভাল জানেন। অতঃপর আমি গভীরভাবে চিন্তা করলাম এবং উপলব্ধি করতে পারলাম যে, এই নূর বা জ্যোতি ঐ সব ফিরিশতার, যারা এ ধরণের মজলিস ও উল্লেখযোগ্য (ধর্মীয়) স্থানসমূহে (জ্যোতি বিকিরণের জন্য) নিয়োজিত থাকেন। আমার অভিমত হল সেখানে ফিরিশতাদের নূর ও রহমতের নূরের সংমিশ্রণ ঘটেছে”।
ফয়ূযুল হারামাইন (আরবী-উর্দু), পৃষ্ঠা নং- ৮০-৮১
৫. মক্কা শরিফের পত্রিকা আল ক্বিবলা পত্রিকা মতে ঈদে মিলাদুন্নবি –
ঈদে মিলাদ্দুন্নবি মক্কা এবং এর অধিবাসীরা পালন করতেন যার নাম ছিল ইয়ম আল ঈদ মাওলিদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম । মুসলমানেরা উত্তম খাবার রান্না করতেন । মক্কা শরিফের আমির এবং হিজাজের কমান্ডার তাঁর সেনাদের সাথে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রওজা শরীফ যিয়ারত করতেন এবং ক্বাছীদা পাঠ করতেন। মক্কা শরীফ থেকে হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মস্থান পর্যন্ত আলোকসজ্জা করা হত এবং দোকান পাট সুসজ্জিত করা হত। হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মস্থানে সকলে মিলে ক্বাছীদা পাঠ করতেন । ১১ রবিউল আউওয়াল শরীফের রাতে বাদ ইশা ঈদে মিলাদুন্নবি পালনের লক্ষে একস্থা হতেন। ১১ রবিউল আউওয়াল শরীফের মাগরীব থেকে ১২ রবিউল আউওয়ালের আছর নামাজ পর্যন্ত প্রতি নামাজের পরে ২১ বার তোপধ্বনি দেওয়া হত ।
রেফারেন্স -
মাসিক তরিকত –লাহোরঃ জানুয়ারী ১৯১৭ , পৃ ২/৩
৬. ইবনে জাওযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বইতে মিলাদুন্নবি সম্পর্কে লিখেন –
হারামাইন শরীফে , মিশর , ইয়েমেন , সমগ্র আরবের মুসলমান অনেকদিনব্যাপী ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করতেন । রবিউল আউওয়াল মাসের চাঁদ দেখে তাদের সুখের সীমা ছাড়িয়ে যেত । তাঁরা একসাথ হয়ে ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করতেন । যার কারনে উনারা সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখরে অবস্থান করেছেন।
বায়ান আল মাওলিদ আন নাবী , পৃ ৫৮
৭. শায়খুল ইসলাম ইবনে হাজর আল হায়তামী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেন –
আমাদের সময়ে যখন ঈদে মিলাদুন্নবি প্লাওনের জন্য জড়ো হতেন ,তাঁরা ভালো কাজের মধ্যে মশগুল থাকতেন। যেমন – দান সদকা কর হত, যিকির হত, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করা হত।
ফতোয়ায়ে আল হাদিথিয়াহ – পৃ – ২০২
বিস্তারিত

“১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ নবীজি বিদায় গ্রহণ করেছেন, তাই এ দিন শোকের দিন” (!) এ কথা কতটুকু সত্য ? আসুন জেনে নেই

“১২ই রবিউল আউয়াল শরীফ নবীজি বিদায় গ্রহণ করেছেন, তাই এ দিন শোকের দিন” (!) এ কথা কতটুকু সত্য ? আসুন জেনে নেই
অনেকেই বলে থাকে, “১২ই রবিউল আউয়াল নবীজি বিদায় গ্রহণ করেছেন, তাই এ দিন হচ্ছে শোকের দিন। তাই এ দিন খুশি প্রকাশ করা যাবে না, শোক প্রকাশ করতে হবে”। এ ধরনের বক্তব্য সরাসরি ইসলাম পরিপন্থী।

কেননা হাদীস শরীফে সরাসরি আছে, --
لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ مُسْلِمَةٍ تُؤْمِنُ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ تُحِدَّ فَوْقَ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ إِلَّا عَلَى زَوْجِهَا أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَعَشْرًا
অর্থঃ আল্লাহ উপর এবং কিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাস রাখে এমন কোন মুসলিম নারীর (কারো মৃত্যুতে) ৩ দিনের বেশি শোক পালন করা হালাল নয়। তবে তার স্বামীর জন্য ৪মাস ১০দিন শোক পালন করতে পারবে। (বুখারী শরীফ হাদীস নং-৫৩৩৮) অর্থাৎ ইন্তিকালের ৩ দিন পর শোক পালন করা জায়েজ নাই।


আবার যেহেতু ঐ একই দিন নবীজি পৃথিবীতে আগমণ করেছেন এবং উনাকে পাওয়ার জন্য সরাসরি কুরআন পাকে খুশি করতে বলা হয়েছে, তাই অবশ্যই এদিন খুশি প্রকাশ করতে হবে, যা মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ। এ সম্পর্কে সূরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে-


“হে রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তারা যে মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে ‘ফযল ও রহমত’ স্বরূপ আপনাকে (নবীজিকে) পেয়েছে, সে জন্য তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। নিশ্চয় তাদের এ খুশি প্রকাশ করাটা তাদের সমস্ত সঞ্চয়ের (ধন সম্পদ, আমল ইত্যাদি) থেকে উত্তম। (সূরা ইউনুস: ৫৮)
তাই যারা এদিনকে দুঃখের দিন বা শোকের দিন বলে প্রচার করে, এরা মূলত ইসলাম অপব্যাখ্যাকারী ও বিভ্রান্তিসৃষ্টিকারী। এরা আসলে নবীর ‍দুশমন, কাফির-মুশরিকদের এজেন্ট। এদের থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুসলমানদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
বিস্তারিত

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন দিবস মুবারকের দিন কুল-কায়িনাত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করলেও শয়তান ঈদ পালন বা খুশি হতে পারেনি

নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন দিবস মুবারকের দিন কুল-কায়িনাত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করলেও শয়তান ঈদ পালন বা খুশি হতে পারেনি
নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন দিবস মুবারকের দিন কুল-কায়িনাত ঈদ বা খুশি প্রকাশ করলেও শয়তান ঈদ পালন বা খুশি হতে পারেনি বরং সে সেদিন সবচেয়ে অখুশি হয়ে অনেক কেঁদে ছিলো।

ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি এর ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’-র ২য় খন্ড, ১৬৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছেঃ
أن إبليس رن أربع رنات حين لعن وحين أهبط وحين ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم وحين أنزلت الفاتحة
ইবলিশ শয়তান জীবনে ৪ বার খুব বেশি কেঁদেছে-
১. আল্লাহ যখন তাকে অভিশপ্ত হিসেবে ঘোষণা দিলেন,
২. যখন তাকে বেহেস্ত থেকে বিতাড়িত করা হল,
৩.নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দুনিয়াতে আগমনের সময় এবং
৪. সূরা ফাতিহা নাযিল হবার সময়


অর্থাৎ ইবলিশ ব্যতিত সকলে এ দিবস আনন্দের সাথে পালন করেছিল তথা ঈদ উদযাপন করেছিল। আজও তামাম বিশ্বের মুসলমান এই বরকতময় দিনে ঈদ তথা খুশি প্রকাশ করে। অন্যদিকে শুধুমাত্র ইবলিশের চেলারা-ই এ দিবসে অখুশি হয়, মন খারাপ করে বসে থাকে, বিদাত বলে ফতোয়া দেয়। দেবে নাইবা কেন? শয়তানের অনুসারী বলে কথা।
বিস্তারিত

ঈদে মীলাদুন নবীর দলিল পবিত্র কুরআন শরীফেই আছে

ঈদে মীলাদুন নবীর দলিল পবিত্র কুরআন শরীফেই আছে
১২ রবিউল আ্উয়াল শরীফ উপলক্ষে খুশি করতে হবে, কি না হবে এটা নিয়ে ডিবেট করে। বলে এর কোন দলিল নাই। অথচ পবিত্র কু্রআন পাকেই এ ব্যাপারে স্পষ্ট দলিল আছে, এর ব্যাখ্যার জন্য হাদীস শরীফে যাওয়ার দরকার নাই।
আসুন সূরা ইউনুস এর ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াত দুটি দেখি
يَا أَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّكُمْ وَشِفَاءٌ لِّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُونَ
অর্থ: “হে মানবজাতি! অবশ্যই মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন নসিহতকারী, অন্তরের পরিশুদ্ধতাদানকারী, হিদায়েত দানকারী ও ঈমানদারদের জন্য রহমত দানকারী।
হে রাসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তারা যে মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ হতে ‘ফযল ও রহমত’ পেয়েছে সে জন্য তারা যেনো খুশি প্রকাশ করে। নিশ্চয় তাদের এ খুশি প্রকাশ করাটা তাদের সমস্ত সঞ্চয়ের থেকে উত্তম।
(সূরা ইউনুস শরীফ : ৫৭-৫৮)
সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াতে বোঝা যাচ্ছে, মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ যে বিষয়টি এসেছে, তার জন্য খুশি প্রকাশ করতে বলা হচ্ছে। সেই বিষয়টির হচ্ছে-

১) নসিহতকারী
২) অন্তরের পরিশুদ্ধতাদানকারী,
৩) হেদায়েত দানকারী
৪) রহমতদানকারী
এবার আসুন, কুরআন পাকের সূরা আলে ইমরানের ১৬৪ নং আয়াতখানা দেখি-
لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍنٍ
“আল্লাহ ঈমানদারদের উপর অনুগ্রহ করেছেন যে, তাদের মাঝে তাদের নিজেদের মধ্য থেকে নবী পাঠিয়েছেন। তিনি তাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করেন। তাদেরকে পরিশোধন করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও কাজের কথা শিক্ষা দেন। বস্তুতঃ তারা ছিল পূর্ব থেকেই পথভ্রষ্ট। (সুরা আলে ইমরান ১৬৪)
এ আয়াত শরীফ অনুসারে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই হচ্ছেন নসিহতকারী, আমাদের অন্তরের পরিশোধকারী এবং হেদায়েতদানকারী।

আবার সূরা আল আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে বলা হচ্ছে-
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ
আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি। ( সুরা আল আম্বিয়া, ১০৭) অর্থাৎ নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছে সমগ্র কায়েনাতের জন্য রহমত।
সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮ নং আয়াত, সূরা আল ইহরানের ১৬৪ নং আয়াত এবং সূরা আম্বিয়ার ১০৭ আয়াত গুলো থেকে পাওয়া যায়---
নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হচ্ছেন নসিহতকারী, হেদায়েতদানকারী, অন্তরের পরিশুদ্ধতাদানকারী এবং রতমত। তাই উনাকে পাওয়ার জন্য খুশি প্রকাশ করাটা মহান আল্লাহ তায়ার নির্দেশ এবং সব চাইতে ফজিলতপূর্ণ আমল। সুবহানাল্লাহ।

বিস্তারিত ব্যাখ্যা:

সূরা ইউনুসের ৫৭ ও ৫৮নং আয়াতের অর্থ ও ব্যাখ্যা
يايها الناس قد جاءتكم موعظة من ربكم وشفاء لـما فى الصدور وهدى ورحمة للمؤمنين. قل بفضل الله وبرحمته فبذالك فليفرحوا هو خير مـما يجمعون.
অর্থ: হে মানুষেরা! তোমাদের রব তায়ালা’র তরফ থেকে তোমাদের নিকট এসেছেন উপদেশ দানকারী, তোমাদের অন্তরের আরোগ্য দানকারী, হিদায়েত দানকারী এবং মু’মিনদের জন্য রহমত দানকারী। (অতএব হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি (স্বীয় উম্মতদেরকে) বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি স্বীয় ফদ্বল ও রহমত স্বরূপ অর্থাৎ অপার দয়া ও অনুগ্রহ হিসেবে উনার প্রিয়তম রসূল হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠিয়েছেন; সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে। এই খুশি প্রকাশের আমলটি তাদের সমস্ত নেক আমল অপেক্ষা উত্তম বা শ্রেষ্ঠ।

জানা আবশ্যক যে, উক্ত সূরা ইউনুসের ৫৭নং আয়াত শরীফের মধ্যে موعظة-شفاء-هدى-رحمة প্রতিটি শব্দহচ্ছে ইসমে মাছদার অর্থাৎ ক্রিয়ামূল বা ক্রিয়া বিশেষ্য। যা ইসমে ফায়িল (কর্তৃবাচ্য) অথবা ইসমে মাফউল (কর্মবাচ্য) হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে এখানে ইসমে ফায়িল বা কর্তৃবাচ্য অর্থেও ব্যবহার করাটাই সমধিক ছহীহ। যদিও কেউ কেউ ইসমে মাফউল বা কর্মবাচ্য অর্থেও গ্রহণ করেছেন। ইসমে ফায়িল অর্থ গ্রহণে উক্ত শব্দসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছেন নবী করিম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। আর ইসমে মাফউল অর্থ গ্রহণে উক্ত শব্দসমূহ দ্বারা উদ্দেশ্য কুরআন শরীফ। কিন্তু উভয় আয়াত শরীফের অর্থ পর্যালোচনা করলে আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে উদ্দেশ্য করাটাই বেশি যথোপযুক্ত। যেমন পরবর্তী ৫৮নং পবিত্র আয়াত শরীফ এর মধ্যে فضل الله এবং رحمته অর্থাৎ رحمة الله দ্বারা আখেরী নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকেই বুঝানো হয়েছে। যা তাফসীরে রূহুল মায়ানী, তাফসীরে মুহাররারুল ওয়াজীয, তাফসীরুল মানার, তাফসীরে বয়ানুল মায়ানী, তাফসীরে মাফাতীহুল গইব, তাফসীরে কবীর ইত্যাদি তাফসীর গ্রন্থসমূহে উল্লেখ রয়েছে।
বিস্তারিত

মীলাদ বা মীলাদুন্নবী শব্দের অস্তিত্ব কুরআন শরীফ হাদীসফেই রয়েছে

মীলাদ বা মীলাদুন্নবী শব্দের অস্তিত্ব কুরআন শরীফ হাদীসফেই রয়েছে
বাতিলপন্থীরা বলে থাকে মীলাদ বা মীলাদুন্নবী শব্দের ব্যবহার নাকি কুরআন শরীফ হাদীস শরীফে কোথাও নাই। এটা নাকি মনগড়া এবং নতুন উদ্ধাবিত শব্দ। তাহলে আসুন দেখা যাক মীলাদ ও মীলাদুন্নবী শব্দ কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফে আছে কিনাঃ
মিলাদ শব্দটির মূল অক্ষর হচ্ছে و + ل + د) ولد) । আমরা দেখব কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফে মূল অক্ষরে এ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে কিনা।

> কোরআন শরীফে মীলাদ শব্দের প্রমানঃ
وَالسَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدتُّ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا
আর শান্তি বর্ষিত হোক আমার উপরে যে দিন আমার জন্ম হয়েছিলো, আর যে দিন আমি ইন্তেকাল করবো । আর যে দিন আমাকে পুররুত্থিত করা হবে জীবিত অবস্থায় । (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)

অনুরূপ হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিজের বক্তব্য উল্লেখ করে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফের মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
وَالسَّلَامُ عَلَيَّ يَوْمَ وُلِدتُّ وَيَوْمَ أَمُوتُ وَيَوْمَ أُبْعَثُ حَيًّا
অর্থ : “আমার প্রতি সালাম (অবারিত শান্তি) যেদিন আমি বিলাদতী শান প্রকাশ করি, যেদিন আমি বিছালী শান প্রকাশ করবো এবং যেদিন আমি জীবিত অবস্থায় পুনরুত্থিত হবো।” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)
আমরা দেখলাম কুরআন মাজীদে মূল অক্ষরে وَلَدَتُ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে; যার অর্থ আমি জন্ম গ্রহণ করেছি । এ শব্দটি প্রমাণ করে মিলাদের মূল অস্তিত্ব কুরআন শরীফে বিদ্যমান ।

> হাদীস শরীফে মীলাদ শব্দের প্রমানঃ
আসুন দেখা যাক, কুরআন শলীফের পাশাপাশি হাদীস শরীফে এ শব্দটির ব্যবহার হয়েছে কিনা । ছিয়া ছিত্তার অন্যতম কিতাব, জামে তিরমিযী শরীফে ميلاد ‘মিলাদ’ (জন্মের সময়) শব্দটি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই ব্যবহার করেছেন । যেমনঃ
১) নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম সাল সম্পর্কে হযরত কায়স ইবনে মাখরামা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেনঃ

عَنِ الْمُطَّلِبِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ قَيْسِ بْنِ مَخْرَمَةَ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ قَالَ: “وُلِدْتُ أَنَا وَرَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ. وَسَأَلَ عُثْمَانُ بْنُ عَفَّانَ قُبَاثَ بْنَ أَشْيَمَ أَخَا بَنِي يَعْمَرَ بْنِ لَيْثٍ أَأَنْتَ أَكْبَرُ أَمْ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ؟ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَكْبَرُ مِنِّي وَأَنَا أَقْدَمُ مِنْهُ فِي الْمِيلادِ وُلِدَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَامَ الْفِيلِ. رواه الترمذي وقَالَ: هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ لا نَعْرِفُهُ إِلا مِنْ حَدِيثِ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَقَ.

অর্থাৎ আমি ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুজনেই “হাতীর বছরে” জন্মগ্রহণ করেছি । হযরত উসমান বিন আফফান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু কুবাস বিন আশিয়ামকে প্রশ্ন করেনঃ আপনি বড় না রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বড় ? তিনি উত্তরে বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমার থেকে বড়, আর আমি উনার পূর্বে জন্মগ্রহণ করেছি ।
দলীলঃ তিরমিযি, আবূ ঈসা মুহাম্মদ ইবনু ঈসা (২৭৯ হিঃ), আস সুনান, , (প্রকাশনা- বৈরুত, দারু ইহ্‌য়ায়িত তুরাসিল আরাবী, হাদিস নং ৩৬১৯

২) হাদীস শরীফে আমরা আরও দেখতে পাই নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
ما من مولود الا يولد على الفطرة অর্থাৎ প্রত্যেক শিশু তার স্বভাবের উপর জন্মলাভ করে ।
দলীলঃ বুখারী শরীফ খন্ড-১, পৃষ্টা- ১৪, হাদিস নম্বর ১৩৫৮,
মুসলিম শরীফ, আস সহীহ হাদীস নং ৬৯২৬

সূতরাং দেখা যাচ্ছে হাদীস শরীফে “মাওলুদ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে ।

৩) বিশুদ্ধ হাদীস শরীফে এসেছে,
سءل رسول صلي عليه و سلم عن صوم الاثنين فقال فيه ولدت وفيه انزل علي وحي
অর্থ: হযরত আবু কাতাদা আনসারী রাদ্বিয়াল্লাহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে সোমবারে রোযা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হল, তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে, এদিন আমি বিলাদত শরীফ লাভ করেছি, আর এদিনই আমার উপর ওহী বা কুরআন শরীফ নাজিল হয়েছে।”
দলীল –
√সহীহ মুসলিম,হাদীছ শরীফ নং-২৮০৭
√সুনানে আবু দাউদ, হাদীছ শরীফ নং-২৪২৮
√ সুনানে বায়হাকী [কুবরা], হাদীছ শরীফ নং-৮২১৭
√ সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীছ শরীফ নং-২১১৭
√ মুসনাদে আবি আওয়ানা, হাদীছ শরীফ নং-২৯২৬
√ মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ শরীফ নং-২২৫৫০ !

৪) হাদিস শাস্ত্রের ইমামগণ স্ব স্ব কিতাবে মীলাদ শব্দটি ব্যবহার করেছেনঃ
বিখ্যাত মুহাদ্দিস আবূ ঈসা মুহাম্মদ ইবনু ঈসা তিরমিজী রহমতুল্লাহি আলাইহি (হিজরী ২৭৯) তার বিখ্যাত কিতাব জামে তিরমিযীর ২য় খণ্ডের ২০৩ পৃষ্ঠায় একটি শিরোনাম রচনা করেছেন যার নাম দিয়েছেন-
باب ما جاء فى ميلاد النبى صلى الله عليه وسلم অর্থাৎ যা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্ম সম্পর্কে এসেছে । এখানে তিনি ‘মীলাদুন্নবী’ শব্দটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মবৃত্তান্ত বুঝাতে ব্যবহার করেছেন ।
অনুরূপভাবে ইমাম বায়হাকী রহমতুল্লাহি আলাইহি (ওফাত ৪৫৮ হিঃ) তার বিখ্যাত সিরাত সংক্রান্ত হাদিসের কিতাব ‘দালায়েলুন নবুওয়ত” নামক কিতাবের ১ম খণ্ডের ৪৯ পৃষ্ঠায় ابواب ميلاد رسول الله শীর্ষক একটি অধ্যায় এনেছেন, যেখানে স্পষ্ট মীলাদে রসূল শব্দটি উল্লেখ করেছেন । যেখানে তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জীবনবৃত্তান্ত আলোচনা করেছেন ।

সূতরাং কুরআন শরীফ , হাদীস শরীফ ও হাদীস শরীফে ইমামদের স্পষ্ট দলীল দ্বারাই মীলাদ ও মীলাদুন্নবীর প্রমান পাওয়া গেলো। সুবহানাল্লাহ।
বিস্তারিত

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী উনাদের জন্য শুভ সংবাদ

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালনকারী উনাদের জন্য শুভ সংবাদ
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “হযরত আবু দ্বারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত আছে যে, একদা তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে হযরত আমির আনছারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার গৃহে উপস্থিত হয়ে দেখতে পেলেন যে, তিনি খুশি প্রকাশ করে উনার সন্তানাদি এবং আত্মীয়-স্বজন, জ্ঞাতি-গোষ্ঠী, পাড়া-প্রতিবেশীদেরকে নিয়ে আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উনার ঘটনাসমূহ শুনাচ্ছেন এবং বলছেন, এই দিবস; এই দিবস (অর্থাৎ এই দিবসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যমীনে মুবারক তাশরীফ এনেছেন এবং ইত্যাদি ইত্যাদি ঘটেছে)।
এতদশ্রবণে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার সকল রহমতের দরজা আপনার জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করছেন এবং যে কেউ আপনার মতো এরূপ কাজ করবে ক্বিয়ামত পর্যন্ত, সেও আপনার মতো নাজাত (ফযীলত) লাভ করবে।” সুবহানাল্লাহ! (আত তানবীর ফী মাওলিদিল বাশীর ওয়ান নাযীর)
অর্থাৎ যারা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ খুশি প্রকাশ করবে তাদের জন্যই- (১) মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিবেন। সুবহানাল্লাহ! (২) সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা মাগফিরাত কামনা করতে থাকবেন। সুবহানাল্লাহ! (৩) এবং তাদেরকে নাজাত দেয়া হবে। এই হুকুম ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সুবহানাল্লাহ!!!
বিস্তারিত

যারা মিলাদ শরীফ, সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ অশ্বীকার করে তাদের সিলসিলারই মুরুব্বীদের কিছু বক্তব্য তুলে ধরা হলো


খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,
يَااَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُمْ مَوْعِظَةٌ مّـِنْ رَّبّـِكُمْ وَشِفَاء لّـِمَا فِى الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ. قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مّـِمَّا يَـجْمَعُوْنَ.
অর্থ: “হে মানুষেরা! হে সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসী! অবশ্যই তোমাদের মাঝে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সর্বপ্রকার ব্যাধিসমূহের সর্বশ্রেষ্ঠ আরোগ্যদানকারী, সর্বশ্রেষ্ঠ হিদায়াত দানকারী এবং সমস্ত কায়িনাতবাসীর জন্য, খাছ করে ঈমানদারদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ রহমতস্বরূপ আমার যিনি হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাশরীফ মুবারক এনেছেন। (সুবহানাল্লাহ) হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি সমস্ত জিন-ইনসান, কায়িনাতবাসীকে জানিয়ে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি যে, ফযল, করম ও রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, সেজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে, ঈদ পালন করে তথা মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করে। এই খুশি প্রকাশ করাটা, ঈদ পালন করাটা, মহাসম্মানিত সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করাটা সবকিছু থেকে উত্তম; যা তারা দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত সূরা ইউনূস শরীফ : সম্মানিত আয়াত শরীফ ৫৮)

বিস্তারিত

পোষাক পরিচ্ছদ ব্যবহারেও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও সুন্নাহসম্মত রীতিনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে

পোষাক পরিচ্ছদ ব্যবহারেও সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও সুন্নাহসম্মত রীতিনীতিকে প্রাধান্য দিতে হবে
আজকাল মুসলমান নারী পুরুষ সকলের মধ্যেই পোষাক পরিচ্ছদ ব্যবহারে এত বেশী কাফির মুশরিক ইহুদী নাসারা তথা বিধর্মী বিজাতীদের অনুসরন অনুকরন করা হচ্ছে যার ফলে একজন মুসলমানকে দেখে বুঝাই সম্ভব নয় সে আদৌ মুসলমান কি-না। অথচ, মুসলিম উম্মাহ এমন এক জাতি উনাদেরকে দেখার সাথে সাথেই বুঝার দরকার ছিলো- উনারা মুসলমান। যা হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম এবং উনাদের অনুসারী সালফে সালেহীন আউলিয়া আজমাঈন উনাদেরকেই কেবল বুঝা যেতো উনারা হলেন মুমিন মুসলমান। সুবহানাল্লাহ! এই কারনে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্নিত হয়েছে নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের কৃষ্টি কালচারের অনুসরন অনুকরন করবে, সে তাদেরই অর্ন্তভুক্ত বলে গন্য হবে এবং যে ব্যাক্তি যে সম্প্রদায়কে মুহব্বত করবে, তাদের সাথেই তার হাশর নশর হবে। (সুনানে আবু দাউদ শরীফ) এই পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে সহজেই বুঝা যায়, কারো অন্তরে ধ্যান ধারনায় যদি বিধর্মী বিজাতীদের মুহব্বত প্রবেশ না করে সে কখনোই তাদের পোষাক-আশাকে সজ্জিত হতে পারে না। অথচ, এক্ষেত্রেও কঠোরভাবে কাফির মুশরিক বিধর্মী বিজাতীদের বিপরীতে আমল করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেমন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে নুরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- তোমরা পথ-পন্থা, রীতি নীতি, চাল-চলন, ও লেবাস-পোশাকেও পৌত্তলিক তথা মুশরিকদের প্রতিকূলে চলো; তাদের অনূকূলে নয়। (বুখারী শরীফ) অর্থাৎ কাফির মুশরিক বিধর্মী বিজাতীদের সবকিছুতেই সম্মানিত মুসলমান উনাদেরকে ওদের বিপরীত করতে হবে। আফসুস, আজ মুসলমান উনারা উনাদের মাত্র সাড়ে তিন হাত শরীরকেও সেই সব কাফির মুশরিক বিজাতীদের লেবাস দ্বারা আবৃত করে দিচ্ছে। নাউযুবিল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে কাফির মুশরিকদের অনুসরন অনুকরন হতে হিফাজত থাকার তৌফিক দান করুন। আমীন তথ্যসূত্রঃ দৈনিক আল ইহসান শরীফ ( http://al-ihsan.net )
বিস্তারিত

বিশেষ কয়েকটি সুন্নতী খাদ্য

বিশেষ কয়েকটি সুন্নতী খাদ্য
১) রুটি-গোশত খাওয়া সুন্নত : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রুটি-গোশত পছন্দ করতেন। গোশতের মধ্যে পিঠের গোশত এবং বিশেষ করে খাশী বা বকরীর কাঁধ ও সামনের ডান পায়ের (হাড়যুক্ত) গোশত অধিক পছন্দ করতেন।হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ভূনা গোশতও খেয়েছেন। গোশতের ব্যাপারে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, “দুনিয়াবাসী ও জান্নাতবাসীদের খাদ্যের মধ্যে গোশতই হলো সর্দার।” (শামায়েলে তিরমিযী, ইবনে মাযাহ শরীফ, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ) ২) কদু খাওয়া সুন্নত : হাদীছ শরীফ-এ উল্লেখ আছে- عن حضرت انس بن مالك رضى الله تعالى عنه انه خياطا دعا النبى صلى الله عليه وسلم لطعام صنعه فذهبت مع النبى صلى الله عليه وسلم فقرب خبز شعير ومرعا فيه دباء وقديد رايت النبى صلى الله عليه وسلم يتتمع الدباء من حوالى القصعة فلم ازل احب الدباء بعد يومئذ অর্থ : “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত যে, জনৈক দর্জি ছাহাবী কিছু খাবার প্রস্তুত করে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দাওয়াত করলেন। আমিও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার সাথে গেলাম। তিনি যবের রুটি আর কিছু শুরুয়া যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল পরিবেশন করলেন। আমি দেখলাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পেয়ালার চতুর্দিক থেকে বেছে বেছে কদু খাচ্ছেন। সে দিনের পর থেকে আমিও কদু খাওয়া পছন্দ করতে লাগলাম।” (বুখারী শরীফ) অতএব, সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, কদু খাওয়া খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। শুধু তাই নয় হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজেই কদুকে খুব পছন্দ করতেন। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালামকে বলেন যে, “তরকারীর সাথে অধিক পরিমানে কদু রান্না করুন। কারণ এতে বিষন্ন মনে শক্তি আসে। কদু বুদ্ধি তীক্ষ্ণ করে ও মস্তিস্ককে শক্তিশালী করে। কদুর প্রতি হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার এমনিতর পছন্দের কারণে আক্বাইদের কিতাবে এসেছে কেউ যদি বলে, “আমি কদু পছন্দ করিনা তাহলে সে কুফরী করলো। কারণ তার এ মতটা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-উনার মত মুবারক-এর বিপরীত।” (কাজীখান, শেফা, যাদুল মা’আদ, আখলাকুন্নবী, বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ) সুতরাং কদু খাওয়া যেহেতু সুন্নত আর হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু কদু পছন্দ করতেন তাই কেউ যদি বলে আমি কদু পছন্দ করিনা তাহলে সে কাফির হয়ে যাবে। ৩) তাজা খেজুরের সাথে খরবুযা (তরমুজ) খাওয়া সুন্নত : উম্মুল মু’মিনীন হযরত ছিদ্দীক্বা আলাইহাস সালাম হতে বর্ণিত তিনি বলেন, “হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাজা খেজুরের সাথে খরবুযা (তরমুজ) খেতেন এবং বলতেন, উভয়টিই উত্তম ফল।” (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, যাদুল মা’আদ) ৪) শশাকে কাঁচা খুরমাসহ আহার করা সুন্নত : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শশাকে কাঁচা খুরমাসহ খেতেন এবং ইরশাদ মুবারক করতেন যে, এটার তাপ ওটার ঠাণ্ডাকে দমন করে। (আবূ দাঊদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ) এছাড়া হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম লবণ সহযোগে শসা (কাকড়ী) খেতেন। (মুসলিম শরীফ, তিরমিযী শরীফ, যাদুল মা’আদ) ৫) কাঁচা (সবুজ) খুরমা শুষ্ক খুরমার সাথে আহার করা সুন্নত : হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, “কাঁচা খুরমা শুষ্ক খুরমার সাথে আহার কর, কারণ, শয়তান মানুষকে এই বস্তু দুটি খেতে দেখলে অনুতাপের সাথে বলতে থাকে যে, এই মানুষ এখনো জীবিত আছে, যে পুরনো বস্তুর সঙ্গে নতুন বস্তু মিশিয়ে একত্রে আহর করে।” (নাসাঈ শরীফ, ইবনে মাযাহ শরীফ) ৬) ঘি-এর পাত্রে মধু রাখা সুন্নত : ঘি-এর পাত্রে মধু রাখাকে সুনুত বলে। হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, ‘ছানা ও সুনুতকে একত্রে চাটনি বানাও, এ দুটোর মধ্যে মৃত্যু ব্যতীত অন্য সকল রোগের আরোগ্য রয়েছে।” (ইবনে মাজাহ শরীফ, যাদুল মাআদ)
বিস্তারিত

সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয

সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, একদিন হাম্বলী মাযহাব উনার সম্মানিত ইমাম ফক্বীহুল উম্মত, ইমামুল আইম্মাহ হযরত ইমাম আহমদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বললেন- ‘সম্মানিত সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয।’ একথা শুনে যাঁরা সমসাময়িক ইমাম-মুজতাহিদ ছিলেন উনারা এসে বললেন, হুযূর! বেয়াদবী ক্ষমা চাই। আপনি যে ফতওয়া দিলেন ‘সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয’- এর পিছনে পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্য থেকে কি কোনো দলীল রয়েছে? তখন তিনি বললেন- ‘পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে অনেক দলীল রয়ে গেছে।’ তখন তিনি আরো বললেন- মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “তোমরা আমার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা এনেছেন তা আঁকড়ে ধরো। যা থেকে বিরত থাকতে বলেছেন তা থেকে বিরত থাক, মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করো। নিশ্চয়ই তিনি কঠিন শাস্তিদাতা”। (পবিত্র সূরা হাশর শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৭)। সুবহানাল্লাহ! তখন উনারা সকলে চুপ হয়ে গেলেন। এ সম্মানিত আয়াত শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে- সুন্নত মুবারক পালন করা ফরয। সুবহানাল্লাহ!
বিস্তারিত

সমগ্র পৃথিবীতে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জাতীয় ভাবে পালন হতো তার প্রমাণ

সমগ্র বিশ্বে এক নামে স্বীকৃত একজন মুহাদ্দিস হচ্ছেন হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমাতুল্লাহি আলাইহি। আজ থেকে পাঁচশত বছর পূর্বে উনার জন্ম। তিনি ইলমে হাদীসের জ্ঞান অর্জন করতে মক্কা শরীফ শরীফ মদীনা শরীফ সব স্থানে ভ্রমন করেন। সকল মাদ্রাসায় পঠিত এবং সকল উছুলে হাদীস শরীফের কিতাবে উনার নাম স্ব মহিমায় উজ্জ্বল দীপ্তি ছড়াচ্ছে। তাঁর রচিত মেশকাত শরীফ এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ "মেরক্বাত শরীফ" সারা পৃথিবীতে একটি আলোড়ন সৃষ্টি কারী কিতাব। তিনি সারাটা জীবন অসংখ্য কিতাব রচনা করে মুসলিম জাহানের জন্য এক বিশাল নিয়ামত রেখে গিয়েছেন।
উনার অসংখ্য কিতাবের মধ্যে একটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক গ্রন্থের নাম হচ্ছে "আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাব্যিয়"। এ কিতাবে তিনি সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন তথা মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ থেকে দলীল পেশ করেছেন। এবং সেই সাথে একটা বিষয় উল্লেখ করেছেন সেটা হচ্ছে, "সারা পৃথিবীর সকল দেশে যে যাঁকজমকের সাথে ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন হতো তার ঐতিহাসিক প্রনান উল্লেখ করেছেন।" আমরা উক্ত কিতাব থেকে সে ঐতিহাসিক বর্ননা গুলো উল্লেখ করার চেষ্টা করবো ইনশাআল্লাহ !

(১) মক্কা শরীফ বাসীর মীলাদ :

"আমাদের মাশায়েখদের ইমাম শায়খ শামসুদ্দিন মুহম্মদ সাখাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, পবিত্র মক্কা শরীফে মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠানে যারা কয়েক বছর উপস্থিত ছিলেন, আমি তাদের মধ্যে অন্যতম একজন। আমরা মীলাদ শরীফ অনুষ্ঠানের বরকত অনুভব করছিলাম যা নিদৃষ্ট কয়েক ব্যক্তির প্রতি ইঙ্গিত করা হয়। এ অনুষ্ঠানের মধ্যেও হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্মস্থানের যিয়ারত আমার কয়েকবার হয়েছে। ….
আল্লামা সাখাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আরো বলেন, মক্কাবাসী বরকত ও কল্যানের খনি। তাঁরা সে প্রসিদ্ধ পবিত্র স্থানের প্রতি বিশেষ মনোনিবেশ করেন, যেটা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার জন্মস্থান। এটা সাউকুল লাইলে অবস্থিত। যাতে এর বরকতে প্রত্যেকের উদ্দেশ্য সাধিত হয়। এসব লোক মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দিন আরো অনেক কিছুর আয়োজন করে থাকেন। এ আয়োজনে আবেদ, নেককার, পরহিজগার, দানবীর কেউই বাদ যায় না। বিশেষ করে হেজাজের আমীর বিনা সংকোচে সানন্দে অংশ গ্রহন করেন এবং উনার আগমন উপলক্ষে ঐ জায়গায় এক বিশেষ নিশান তৈরী করা হত। পরবর্তীতে এটা মক্কা শরীফে বিচারক ও বিশিষ্ট আলেম আল-বুরহানিশ শাফেয়ী মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উপলক্ষ্যে আগত যিয়ারতকারী খাদেম ও সমবেত লোকদের খানা ও মিষ্টি খাওয়ানো পছন্দনীয় কাজ বলে রায় দিয়েছেন।"""

(২) মদীনা শরীফ বাসীদের মীলাদ শরীফ মাহফিল :

" মদীনা শরীফ বাসিগনও মীলাদ শরীফ মাহফিলের আয়োজন করতেন এবং অনুরুপ অনুৃষ্ঠানাদি পালন করতেন। বাদশাহ মোজাফফর শাহ আরিফ অধিক আগ্রহী এবং সীমাহীন আয়োজনকারী ছিলেন। হযরত ইমাম আবু শামা রহমাতুল্লাহি আলাইহি যিনি ইমাম নববী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার অন্যতম উস্তাদ এবং বিশেষ বুজুর্গ ছিলেন, স্বীয় কিতাব "আল বায়াছ আলাল কদয়ে ওয়াল হাওয়াদিছে" বাদশাহের প্রশংসা করেছেন এবং বলেছেন এরকম ভালো কাজ সমূহ তার খুবই পছন্দ এবং তিনি এধরনের অনুষ্ঠান পালনকারীদের উৎসাহ প্রদান ও প্রশংসা করতেন। ইমাম জাজরী রহমাতুল্লাহি আলাইহি আরো সংযোজন করে বলেন, এসব অনুষ্ঠানাদী পালন করার দ্বারা শয়তানকে নাজেহাল এবং ঈমানদারদের উৎসাহ উদ্দীপনা দানই উদ্দেশ্যে হওয়া চাই।"

(৩) মিসর ও সিরিয়াবাসীর মীলাদ শরীফ:

" মীলাদ শরীফ মাহফিলে সবচাইতে অগ্রগামী ছিলেন মিসর ও সিরিয়াবাসি। মিসরের সুলতান প্রতি বছর পবিত্র বিলাদত শরীফের রাত্রে মীলাদ শরীফ মাহফিলের আয়োজনের অগ্রনী ভূমিকা রাখতেন। ইমাম সামছুদ্দীন সাখাবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বর্ননা করেন আমি ৭৮৫ হিজরীতে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রাতে সুলতান বরকুকের উদ্যোগে আলজবলুল আলীয়া নামক কেল্লায় আয়োজিত মীলাদ শরীফ মাহফিলে হাজির হয়েছিলাম। ওখানে আমি যা কিছু দেখেছিলাম, তা আমাকে অবাক করেছে অসীম তৃপ্তি দান করেছে। কোনোকিছুই আমার কাছে অসস্থিকর লাগেনী। সে পবিত্র রাতে বাদশার ভাষন, উপস্থিত বক্তাগনের বক্তব্য, কারীগনের তেলাওয়াতে কুরআন শরীফ, এবং নাত শরীফ পাঠকারীগনের না'ত আমি সাথে সাথে লিপিবদ্ধ করে নিয়েছি।"

(৪) স্পেন ও পাশ্চাত্য দেশে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন :

" স্পেন ও পাশ্চাত্য শহরগুলোতে পবিত্র মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর রাতে রাজা বাদশাহগন জুলুস বের করতেন। সেথায় বড় বড় ইমাম ও ওলামায়ে কিরামগন অংশ গ্রহণ করতেন। মাঝ পথে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোক এসে তাঁদের সাথে যোগ দিতেন এবং কাফিরদের সামনে সত্য বানী তুলে ধরতেন। আমি যতটুকু জানি , রোমবাসীগনও কোন অংশে পিছিয়ে ছিলো। তারাও অন্যান্য বাদশাহগনের মত মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিলের আয়োজন করতেন।"

(৫) অনারব দেশে তথা ভারতবর্ষে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম:

" আরব ছাড়াও অনারবে মীলাদ শরীফ মাহফিলের প্রচলন ছিলো মহাসমারোহে।যেমন- পবিত্র রবিউল আউয়াল মাসে এবং মহিমান্বিত দিনে এসকল এলাকার অধিবাসীদের মীলাদ শরীফ মাহফিলের নামে জাঁকজমক পূর্ন মজলিসের আয়োজন হতো গরীব মিসকিনদের মধ্যকার বিশেষ ও সাধারণ সকলের জন্য বহু ধরনের খাবারের বন্দোবস্ত করা হত। তাতে ধারাবাহিক তেলাওয়াত বহু প্রকার খতম এবং উচ্চাঙ্গ ভাষায় প্রসংসা সম্বলিত কবিতা আবৃত্তি হতো। বহু বরকতময় ও কল্যানময় আমলের সমাহার ঘটতো বৈধ পন্থায় আনন্দ প্রকাশ করা হতো, বহু বিখ্যাত আলেমগনও তাতে অংশ গ্রহণ করতেন।….মুঘল বাদশাহ হুমায়ুনও বিশাল জাকজমকের সাথে প্রতিবছর মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মাহফিলের আয়োজন করতেন…!"""

দলীল-
√ আল মাওরিদুর রাভী ফি মাওলিদিন নাবিয়্যি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
লেখক – ইমামুল মুহাদ্দেসীন হযরত মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি। ওফাত : ১০১৪ হিজরী।

সম্মানিত পাঠক বৃন্দ ! দেখুন সারা দুনিয়াতে আজ থেকে ৫০০/৬০০ বছর আগেও সমগ্র দেশ ব্যাপী দেশের বাদশাহ এবং জনগন সবাই মিলে ব্যাপক ভাবে পবিত্র ঈদে মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করতেন। এবং সে সকল মাহফিলে উপস্থিত থাকেন তখনকার যুগ শ্রেষ্ঠ আলেম এবং ইমামগন। তখন পৃথিবীর যমীনে কোন মানুষই এর বিরোধিতা করে নাই। কোন আপত্তি করে নাই।
তবে আজ ২০/২৫ বছর ধরে কোন নব্য দল উদয় হলো যে, এরা এই যুগযুগ ধরে চলে আসা এই বরকতময় আমলের বিরোধিতা করে ? মীলাদুন্নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন হারাম নাজায়িয বলে কোন সাহসে ? এই নব্য উদিত ফেৎনা ওহাবী/সালাফী/জামাতি/ দেওবন্দী খারেজীদের কে অধিকার দিয়েছে মনগড়া ফতোয়া দেয়ার ?
বিস্তারিত

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্রতম সুমহান জীবনী মুবারক (৪২)

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাপবিত্রতম সুমহান জীবনী মুবারক (৪২)
'ইনযীল শরীফ-এ' আখিরী নবী, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের সুসংবাদ ও ছানা-ছিফত:
--------------------------------------

'ইনযীল শরীফ' -এ রয়েছে হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, "আল্লাহ পাক উনার হাবীব, আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আগমন করবেন না যতক্ষন না আমি
দুনিয়া থেকে চলে যাবো। আর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন যমীনে আগমন করবেন তখন তিনি সমস্ত জ্বিন-ইনসানকে রহমত দান করবেন, নাজাত দান করবেন। তিনি নিজ থেকে কোন কথা বলবেন না যতক্ষণ মহান আল্লাহ পাক তিনি ওহী নাযিল না করবেন।"

কুরআন শরীফ-এ এসেছে, "তিনি (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ওহী ব্যতীত নিজ থেকে কোন কথা বলেন না।"
আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সরল সঠিক পথে মানুষকে পরিচালিত করবেন। জান্নাতের সুসংবাদ প্রদান করবেন এবং জাহান্নামের শাস্তির ভয় দেখাবেন।

মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার উপর ওহী করেছেন, যা ইনযীল শরীফ-এ বর্ণিত রয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, হে আমার নবী হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আপনি আমার যিনি হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনুন এবং উনার খিদমত করুন এবং আপনার উম্মতদেরকে বলে দিন যে, তারা প্রত্যেকেই যেনো আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনে এবং উনার ছানা ছিফত বর্ণনা করে এবং উনাকে পেলে উনার খিদমত যথাযথভাবে করে।

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, হে আমার নবী হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম! আপনি জেনে রাখুন, আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যদি সৃষ্টি না হতেন তাহলে আমি হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সৃষ্টি করতাম না, জান্নাত, জাহান্নাম এমনকি কায়িনাতের কোন কিছুই সৃষ্টি করতাম না। আমি যখন আরশে মুয়াল্লা সৃষ্টি করলাম তখন আরশ কম্পমান হচ্ছিলো। অতঃপর আমি আরশ মুবারক-এ লিখে দিলাম-
لا اله الا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم
'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহম্মাদুর রসূলুল্লাহ' ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তখন আরশে মুয়াল্লাহ সি'র হয়ে গেলো সুবহানাল্লাহ!

হাদীছ শরীফ-এ এসেছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। একদা জার সম্প্রদায় ও নাছারারা আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট হাযির হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেন। ওই সময় তারা বললেন যে, ওই মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম। যিনি আপনাকে সত্য দ্বীন ইসলামসহ প্রেরণ করেছেন। নিশ্চয়ই আমরা ইনযীল শরীফ-এ আপনার ছানা-ছিফত, ফাযায়িল-ফযীলত, মর্যাদা-মর্তবার বর্ণনা পাঠ করেছি। আর হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম আপনার সম্পর্কে আমাদেরকে সুসংবাদ প্রদান করেছেন। (মাদারিজুন নুবুওওয়াত)
(ইনশাআল্লাহ চলবে)
বিস্তারিত

বছরে দুই ঈদ ছাড়াও আরো ঈদ থাকার দলীল

বছরে দুই ঈদ ছাড়াও আরো ঈদ থাকার দলীল
(১) হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র বিলাদত শরীফ, পবিত্র বিছাল শরীফ, পুনরুত্থান শরীফ প্রত্যেকটিই রহমত, বরকত ও সাকীনা অর্থাৎ ঈদ বা খুশি প্রকাশের কারণ। হযরত ঈসা রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার ব্যাপারে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- 'উনার প্রতি সালাম (শান্তি), যে দিন তিনি বিলাদত শরীফ গ্রহণ করেছেন এবং যেদিন তিনি বিছাল শরীফ গ্রহণ করবেন এবং যেদিন তিনি পুনরুত্থিত হবেন।' (পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ, পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫) আবার হযরত ইয়াহ্ইয়া আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে উনার নিজের বক্তব্য পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- 'আমার প্রতি সালাম যেদিন আমি বিলাদত শরীফ গ্রহণ করি, যে দিন আমি পবিত্র বিছাল শরীফ গ্রহণ করি এবং যেদিন পুনরুত্থিত হবো।'
(পবিত্র সূরা মারইয়াম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৩৩)।

(২) পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত আছে, হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সৃষ্টি, যমীনে তাশরীফ গ্রহণ ও পবিত্রতম বিছাল শরীফ গ্রহণ পবিত্র 'জুমুয়ার দিনে' হওয়ার কারণে পবিত্র জুমুয়ার দিনকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পবিত্র ঈদুল আদ্বহা অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ও মহান বলে ঘোষণা করেছেন। (সুনানু ইবনি মাজাহ শরীফ, সুনানুদ দারিমী, মিশকাতুল মাছাবীহ ১২০ পৃষ্ঠা- প্রতিটি কিতাবের জুমুয়াহ অধ্যায় )। তাই
জুুমুয়ার দিন ঈদ হিসেবে বছরে ৫০ দিন ঈদ হয়। সুবহানাল্লাহ!

(৩) পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো বর্ণিত আছে, পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ উনার পবিত্র ৩ নম্বর আয়াত শরীফখানার মাধ্যমে ইসলাম উনার পূর্ণাঙ্গতা ঘোষণা করা হয়েছে, সে পবিত্র আয়াত শরীফখানা নাযিলের দিনটি আরাফার দিন এবং জুমুয়ার দিন হওয়ায়, একসাথে দুই 'ঈদ' হিসেবে গ্রহণীয়। (পবিত্র তিরমিযী শরীফ কিতাবুত তাফসীর; হাদীস নম্বর ৩৩১৮, মুসলিম শরীফ কিতাবুত তাফসীর, সুনানে নাসায়ী কিতাবুল হজ্জ)
বিস্তারিত

শরীয়তে ঈদ কয়টি ? শরীয়তে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা এ দু’টি ঈদ ছাড়াও আরো ঈদের অস্তিত্ব রয়েছে

শরীয়তে ঈদ কয়টি ? শরীয়তে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আদ্বহা এ দু’টি ঈদ ছাড়াও আরো ঈদের অস্তিত্ব রয়েছে
১.মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন-
হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনিভবলেন, হে আল্লাহ পাক আপনি আমাদের জন্য আসমান
থেকে খাদ্যসহ খাঞ্চা নাজিল করুন। যাতে সে দিনটি আমাদের জন্য এবং আমাদের
পরবর্তীদের জন্য ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারিত হয়। (সূরা মায়িদা-১১৪)
অর্থাৎ এ আয়াত শরীফ-এ ইহুদীদের খাদ্যের খাঞ্চা নাজিলের দিনকে তাদের জন্য
ও পরবর্তী তথা ক্বিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য ঈদের দিন হিসেবে ঘোষণা
করা হয়েছে।

২.হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে-
"হযরত ওবায়েদ বিন সাব্বাক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মুরসাল সূত্রে
বর্ণনা করেন, হযরত রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এক
জুমুয়ার দিনে বলেন, হে মুসলমান সম্প্রদায়! এটি এমন একটি দিন যাকে মহান
আল্লাহ পাক তিনি ঈদ স্বরূপ নির্ধারণ করেছেন।" (ইবনে মাযাহ, মুয়াত্তা
মালিক, মিশকাত)

৩.হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে-
"হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা
. "আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণ করলাম" এ আয়াত শরীফটি শেষ
পর্যন্ত পাঠ করলেন। তখন উনার নিকট এক ইহুদী ছিল সে বলে উঠলো, "যদি এমন
আয়াত শরীফ আমাদের ইহুদী সম্প্রদায়ের প্রতি নাযিল হতো আমরা আয়াত শরীফ
নাযিলের দিনটিকে "ঈদ" বলে ঘোষণা করতাম।" এটা শুনে হযরত ইবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, এ আয়াত শরীফ সেই দিন নাযিল হয়েছে
যেদিন এক সাথে দু'ঈদ ছিল- (১) জুমুয়ার দিন এবং (২) আরাফার দিন।"
(তিরমিযী)
উপরোক্ত হাদীছ শরীফ-এ জুমার দিন ও আরাফার দিন অর্থাৎ ৯ই যিলহজ্বকে ঈদের
দিন বলা হয়েছে।

৪.অন্য হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান
মু'মিন মুসলমানদের প্রতি মাসে চারটি অথবা পাঁচটি ঈদ রয়েছে। অর্থাৎ
প্রতিমাসে চারটি অথবা পাঁচটি সোমবার হয়ে থাকে। তাকেও ঈদের দিন বলা
হয়েছে। (কিফায়া শরহে হিদায়া ২য় খ- বাবু ছলাতিল ঈদাইন, হাশিয়ায়ে
লখনবী আলাল হিদায়া)

৫. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন-
রোযাদারের জন্য দুটি ঈদ বা খুশি। একটি হলো তার প্রতিদিনের ইফতারের সময়
আর অন্যটি হলো মহান আল্লাহ পাক উনার সাক্ষাতের সময়। উপরোক্ত হাদীছ
শরীফসমূহ দ্বারা জানা গেল যে, শুক্রবার দিন, সোমবার দিন এবং আরাফার দিনটি
হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর জন্য ঈদ তথা খুশির দিন। অর্থাৎ ঈদুল আদ্বহা ও ঈদুল
ফিতর এই দুই ঈদ যেভাবে হাদীছ শরীফ-এর দ্বারা প্রমাণিত ঠিক সেভাবেই তৃতীয়
ঈদ হিসেবে জুমুয়ার দিন আর চতুর্থ ঈদ হিসেবে সোমবার শরীফ এবং পঞ্চম ঈদ
হিসাবে আরাফার দিন হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।

সুতরাং ইসলামী শরীয়ত মুতাবিক বছরে প্রায় ১৭৭/১৮০টি ঈদ রয়েছে। আর তা
হচ্ছে বছরে ৫২টি শুক্রবার + ৫২টি সোমবার শরীফ + রমাদ্বান শরীফ-এ ৩০টি +
বাকী ১১ মাসের প্রতিমাসে ৩টি করে (১১ী৩)=
৩৩টি + জিলহজ্বের ১ম ৯ দিনে ৯টি + মুহাররম
মাসে ২টি + ২৭ শে রজব ১টি + ১৫ই শা'বান ১টি
অর্থাৎ (৫২+৫২+৩০+৩৩+৯+২+১+১)= ১৮০টি ঈদ রয়েছে।
যা সবগুলোই হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত।

অতএব, যারা বলে শরীয়তে দুই ঈদ ব্যতীত তৃতীয় ঈদের কোন অস্তিত্ব নেই
তাদের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কুরআন সুন্নাহর খিলাফ ও কুফরীমূলক বলে
প্রমাণিত হলো।
বিস্তারিত

আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে- নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাসহ সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা করা সরকারের জন্য ফরয

আসন্ন পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে- নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাসহ সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা করা সরকারের জন্য ফরয
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “আমার আগমন মূর্তি ও বাজনা ধ্বংস করার জন্য।” অন্য পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- “গান-বাজনা মনের মধ্যে নেফাকী পয়দা করে।” সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার মধ্যে গান-বাজনা হারাম ও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মুসলমান দেশে প্রকাশ্যে গান-বাজনা বা নৃত্যের আসর বসে। এই হারাম কাজকে সরকার সমর্থন করে এবং সাহায্য-সহায়তা করে। সরকার ব্যাপক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে। এই হারাম অশ্লীল ও বেহায়াপনা কাজে এত নিরাপত্তা! অথচ প্রতিবছর পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আসলে নিরাপত্তা তো দূরের কথা সরকারের তরফ থেকে অন্য কোনো সাহায্য-সহায়তাও পাওয়া যায় না। অথচ পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের বড় দ্বীনী উৎসব। এই দিন আমাদের প্রিয় রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়াতে তাশরীফ মুবারক আনেন। এখন আমাদের দেখার বিষয়- সরকার যদি নিজেকে মুসলমান দাবি করে, তাহলে এর চেয়ে বহুগুণে নিরাপত্তাসহ সার্বিক সহায়তা করে তা প্রমাণ করুক।
বিস্তারিত

সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ কি?


’সাইয়্যিদ’ অর্থ শ্রেষ্ঠ এবং ’আ’ইয়াদ’ হচ্ছে ঈদ বা খুশির বহুবচন। সূতরাং সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ অর্থ ’সকল ঈদের সাইয়্যিদ’। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ উপলক্ষে ঈদ পালন বা খুশি প্রকাশ করাই হচ্ছে সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ।
সুমহান বিলাদত শরীফ উনার তারিখঃ নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার দিন হচ্ছে সম্মানিত ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ । এটাই সবচেয়ে ছহীহ ও মশহূর মত। হাফিয আবূ বকর ইবনে আবী শায়বাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছহীহ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন- “হযরত আফফান রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার হতে, তিনি হযরত ছালিম ইবনে হাইয়্যান রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে তিনি হযরত সাঈদ ইবনে মীনা রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেছেন যে, হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ও হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনারা বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘হস্তি বাহিনী’ বর্ষের ১২ই রবীউল আউওয়াল শরীফ পবিত্র ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার শরীফ) সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন।”(ওয়াছ ছিহ্হাহ্ ওয়াল মাশাহীর-১/২৬৭, বুলূগুল আমানী শরহিল ফাতহির রব্বানী ২য় খন্ড ১৮৯ পৃষ্ঠা, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৩য় খন্ড ১০৯ পৃষ্ঠা)৷
অার এই ১২ই রবীউল আউয়াল শরীফ দিনটিই হচ্ছে সাইয়্যিদুল আইয়াদ শরীফ বা সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদের দিন৷ সুবহানাল্লাহ।
বিস্তারিত